বিশ্বে কলেরার প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে: ডব্লিউএইচও
বেশ কয়েক মাস ধরে বিশ্বজুড়ে কলেরার প্রাদুর্ভাব কমতির দিকে ছিল। তবে চলতি বছরে এসে রোগটিতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে দরিদ্র ও সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে এর প্রকোপ বেশি। বিশ্বের ২৬টি দেশে কলেরা ছড়িয়ে পড়েছে। দ্রুত বাড়ছে কলেরায় আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর হারও। আজ শুক্রবার এসব তথ্য দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে কলেরা ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তিরা মারাত্মক ডায়রিয়ায় ভুগতে পারেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কলেরায় আক্রান্ত হওয়ার পর মাঝারি ধরনের উপসর্গ, এমনকি কোনো উপসর্গ দেখা না–ও দিতে পারে। তবে চিকিৎসার ক্ষেত্রে গাফিলতি করা যাবে না। কারণ, সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা যেতে পারেন আক্রান্ত ব্যক্তি।
ডব্লিউএইচওর কলেরা নিয়ে কাজ করা দলের প্রধান ফিলিপ বারবোজা। আজ জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে কলেরায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমতে থাকলেও এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি, গত বছর থেকে বিভিন্ন দেশে কলেরার প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এ বছরে কলেরায় গড় মৃত্যুহারও অনেক বেশি। এটা পাঁচ বছরের গড় মৃত্যুহারের প্রায় তিন গুণ। আর আফ্রিকায় কলেরায় আক্রান্ত প্রায় ৩ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।’
অন্য বছরগুলোতে সাধারণত ২০টির কম দেশে কলেরার প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া যায়। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত সিরিয়ায় অন্তত ৩৩ জনের কলেরায় মৃত্যু হয়েছে। এতে করে চরম স্বাস্থ্যগত হুমকির মুখে পড়েছে ১১ বছর ধরে চলা যুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটি। সিরিয়া ছাড়াও কলেরা ছড়িয়ে পড়া আফ্রিকা ও এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ফিলিপ বারবোজা। এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানও। দেশটির বড় একটি অংশ বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
ডব্লিউএইচও সাধারণত জরুরি সময়ের জন্য কলেরার টিকা মজুত রাখে। তবে বর্তমান সংকটের মধ্যে এ রোগের টিকার ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরেছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা ফিলিপ বারবোজা। তিনি বলেন, ‘কলেরার ঝুঁকি কমানোর একটি কৌশল হতে পারে টিকাদান কর্মসূচি। তবে এটা স্পষ্ট যে তীব্র বা এর চেয়ে কম ভয়াবহ কলেরা প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার জন্য আমাদের হাতে যথেষ্ট টিকা নেই। চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত দেওয়ার জন্য আমাদের কাছে মাত্র কয়েক মিলিয়ন টিকা আছে।’