পশ্চিমা-রাশিয়া বন্দিবিনিময়: মুক্তি পেলেন মার্কিন সাংবাদিক গার্শকোভিচসহ ২৬ জন
রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় বন্দিবিনিময় হলো। এই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকার সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচসহ উভয় পক্ষের মোট ২৬ জন মুক্তি পেয়েছেন।
তুরস্কের মধ্যস্থতায় এই বন্দিবিনিময় চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির সঙ্গে যুক্ত আছে সাতটি দেশ। চুক্তির আওতায় রাশিয়ার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১৬ জন। আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১০ জন। মুক্তির পর বন্দীদের আঙ্কারার মাধ্যমে নিজ নিজ দেশে পাঠানো হচ্ছে।
রাশিয়ার কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়া ১৬ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩ নাগরিক, ১ জন মার্কিন গ্রিন কার্ডধারী, ৫ জন জার্মান ও ৭ জন রুশ রাজবন্দী রয়েছেন।
তুরস্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার যে ১০ বন্দী ছাড়া পেয়েছেন, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, স্লোভেনিয়া, পোল্যান্ড ও জার্মানির কারাগারে ছিলেন।
রাশিয়ার কারাগার থেকে সাংবাদিক গার্শকোভিচের সঙ্গে মুক্তি পেয়েছেন সাবেক মার্কিন নৌসেনা পল হুইলেন, মার্কিন-রুশ দ্বৈত নাগরিক অলসু কুরমাশেভা ও মার্কিন গ্রিন কার্ডধারী কারা-মুর্জা। এই চারজনের মুক্তির বিষয়টি গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বন্দিবিনিময়ের এই চুক্তিকে তিনি কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
সাংবাদিক গার্শকোভিচকে গত বছর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তাঁকে ১৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
সাবেক মার্কিন নৌসেনা হুইলেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ২০২০ সালে। তাঁর বিরুদ্ধেও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছিল।
মার্কিন অনুদানে চলা রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টির সাংবাদিক কুরমাশেভাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল গত বছর। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগে তাঁকে সাড়ে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী কারা-মুর্জাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ২০২২ সালে। রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতার অভিযোগে তাঁকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
বন্দিবিনিময়ের বিষয়ে রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির ঘনিষ্ঠ লিওনিড ভলকভ বলেন, ঐতিহাসিক এই বন্দিবিনিময় অনেকের জন্য আনন্দের হলেও তাঁর জন্য কষ্টের। কারণ, নাভালনি বেঁচে থাকলে তাঁর নামও বন্দিবিনিময়ের এই তালিকায় থাকত।
বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় মুক্তি পাওয়া রুশ নাগরিকদের মধ্যে অন্যতম ভাদিম ক্রাসিকভ। রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি-সংশ্লিষ্ট এই ব্যক্তি জার্মানির কারাগারে ছিলেন।
এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এক যুগ ধরে বন্দী থাকা রুশ অস্ত্র ব্যবসায়ী ভিক্তর বাউতকে মুক্তি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিনিময়ে রাশিয়া মুক্তি দেয় মার্কিন বাস্কেটবল তারকা ব্রিটনি গ্রিনারকে।