ইউরোপে নতুন কট্টর ডানপন্থী জোট

ইউরোপে নতুন জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান (ডানে)ছবি: ডয়চে ভেলে

ফ্রান্সের সংসদ নির্বাচনে কট্টর ডানপন্থী আরএন দলের বিপুল সাফল্যের মধ্যেই ইউরোপের কয়েকটি পপুলিস্ট দল মিলে আরও সংঘবদ্ধ হওয়ার পথে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান ইউরোপীয় ইউনিয়নের পপুলিস্ট দলগুলো নিয়ে একটি নতুন জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।

গতকাল রোববার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্রের পপুলিস্ট দলগুলোকে নিয়ে ‘প্যাট্রিয়টস ফর ইউরোপ’ নামের একটি জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন ভিক্টর ওরবান। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই তিন দল মিলিয়ে একটি নতুন কট্টর ডানপন্থী দল গঠন করা হবে।

ওরবানের দাবি, হাঙ্গেরির ফিদেস, অস্ট্রিয়ার ফ্রিডম পার্টি ও চেক প্রজাতন্ত্রের ‘অ্যাকশন অব ডিজস্যাটিসফাইড সিটিজেন্স’ বা ইয়েস দল আরও সদস্য আকৃষ্ট করে ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী কট্টর ডানপন্থী জোট হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।

আজ সোমবার থেকে আাগামী ছয় মাসের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করছে হাঙ্গেরি। এর ঠিক আগেই ওরবানের এই পদক্ষেপ অনেক সদস্য দেশের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। তিনি বারবার বিভিন্ন বিষয়ে ইইউ নেতাদের ঐকমত্যের পথে বাধা সৃষ্টি করে চলেছেন। সভাপতি হিসেবে এবার তিনি আরও বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আপাতত কট্টর ডানপন্থী শক্তির মধ্যে ঐক্যের অভাব রয়েছে। ইসিআর ও আইডি গ্রুপের বাইরেও বিচ্ছিন্ন কিছু দল রয়েছে। ফ্রান্স ও ইতালির দুই ‘বাস্তবঘেঁষা’ কট্টর ডানপন্থী দলের নেতৃত্বে ‘ইউরোপিয়ান আইডেন্টিটি অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি’ জোট থেকে জার্মানির এএফডি দলকে সম্প্রতি বহিষ্কার করা হয়েছে।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সংসদীয় গোষ্ঠীর স্বীকৃতি পেতে হলে ওরবানের জোটকে কমপক্ষে আরও চারটি দেশের দলকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এএফডি সেই জোটে প্রবেশ করবে কি না, সে বিষয়ে জল্পনা–কল্পনা চলছে। ওরবানের জোট আপাতত ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রভাব সীমিত রেখে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করবে বলে জোটের এক নেতা জানিয়েছেন। তবে ৭০৫ সদস্যের পার্লামেন্টে মাত্র ২৪টি আসন নিয়ে সেই জোট আপাতত তেমন শক্তি প্রদর্শন করতে পারবে না বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। ১৬ জুলাই সদ্য নির্বাচিত সদস্যরা প্রথম অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে ইউরোপের কট্টর ডানপন্থী শিবিরে বিভাজন রয়েছে। বেশির ভাগ দল এখন পর্যন্ত ক্ষমতার স্বাদ না পেলেও হাঙ্গেরির ফিদেস পার্টি একটানা ক্ষমতায় রয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে অস্ট্রিয়ার সাধারণ নির্বাচনে ফ্রিডম পার্টি ভালো ফল করে সরকার গঠন করতে পারে। সেটি হলে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ছাড়াও ইইউ সদস্যদেশের সরকার পরিষদেও নতুন এই জোটের শক্তি বেড়ে যাবে।