পশ্চিমাদের চাপে জাতিসংঘ, ছড়ানো হচ্ছে ভুয়া খবর: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর দেশটির হাজার হাজার বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে শহরের পর শহর। যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসব খবর উঠে এসেছে। এ নিয়ে সরব পশ্চিমা দেশগুলোসহ জাতিসংঘের কর্তাব্যক্তিরা। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের যেসব খবর সামনে আসছে, ঘটনা আদতে তেমন নয় বলে দাবি করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেন লাভরভ। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এ নিয়ে গুটিকয় পশ্চিমা গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। লাভরভের ভাষ্যমতে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ভুয়া খবর ছড়াচ্ছে। এই খবরগুলো আরও ছড়িয়ে দিতে জাতিসংঘের কর্মকর্তাসহ আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইউক্রেনে হামলা শুরুর জন্য পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর কর্মকাণ্ডকে প্রথম থেকেই দায়ী করে আসছে রাশিয়া। বিবিসির সাক্ষাৎকারেও সেই একই কথা বলেছেন লাভরভ। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা বিশেষ সামরিক অভিযানের ঘোষণা দিয়েছিলাম। কারণ, ইউক্রেনকে ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত করা যে অপরাধ, তা পশ্চিমাদের বোঝাতে আমাদের কাছে আসলে আর কোনো পথ বাকি ছিল না।’
আলাপের একপর্যায়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনে নাৎসি প্রভাব রয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পেছনেও রাশিয়ার একটি উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেনকে ‘নাৎসি প্রভাবমুক্ত করা’।
জার্মান নাৎসি বাহিনীর নেতা অ্যাডলফ হিটলারের শরীরে ‘ইহুদি রক্ত’ ছিল—সম্প্রতি এমন মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন লাভরভ। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একজন ইহুদি।
সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন উপস্থাপক। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের চেরনিহিভ অঞ্চলের ইয়াহিদনে গ্রামে ৩৬০ জন বাসিন্দাকে একটি স্কুলের মাটির নিচতলায় ২৮ দিন থাকতে বাধ্য করেছিল রুশ বাহিনী। তাদের মধ্যে ৭৪ শিশু ও ৫ জন প্রতিবন্ধী ছিল। সেখানে পানি ও শৌচাগারের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ওই ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়। লাভরভের কাছে উপস্থাপক প্রশ্ন করেন, ‘সেটা কি নাৎসিদের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল?’
জবাবে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা দুঃখজনক ব্যাপার। তবে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার, জাতিসংঘের মহাসচিব, অন্যান্য প্রতিনিধিসহ আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের চাপ দিচ্ছে পশ্চিমারা। আর পশ্চিমাদের ভুয়া খবরগুলো আরও ছড়িয়ে দিতে প্রায়ই তাঁদের ব্যবহার করা হচ্ছে।’