উহানে করোনা নিয়ে রিপোর্ট করা সাংবাদিকের বিচার শুরু
চীনের উহানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর এ নিয়ে প্রতিবেদনকারী সাংবাদিক ঝ্যাং ঝানের (৩৭) বিচার আজ সোমবার শুরু হয়েছে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের জের ধরে গত মে মাসে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। তখন থেকে কারাগারে আছেন তিনি। খবর এএফপির।
ঝ্যাংয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা সংশ্লিষ্ট মামলার বিচার সাংহাইয়ের একটি আদালতে সকালে শুরু হয়। এ সময় আদালতের বাইরে তাঁর ১২ জনের মতো সমর্থক সমবেত হন। কিন্তু বিচারকাজ দেখতে আসা সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের আদালতে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ।
কোভিড-১৯–এর উৎস নিয়ে তদন্তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একটি প্রতিনিধিদল উহানে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে এই বিচার শুরু হলো। সরকারি কৌঁসুলিরা ঝ্যাংকে চার থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার সুপারিশ করেছেন। তবে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঝ্যাং ঝান লেখনী, ভিডিও ও অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করে উইচ্যাট, টুইটার ও ইউটিউবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে বিদেশি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে উহানের ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বাজেভাবে তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সূচনা চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে। ওই সময় সেখানে করোনা নিয়ে প্রতিবেদন করায় সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ঝ্যাং ঝান একজন সাবেক আইনজীবী। ‘ঝগড়া বাধানো ও সমস্যাকে উসকানি’ দেওয়ায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। চীনে সরকারবিরোধীদের প্রায়ই এই অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
গত ১৯ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে ঝ্যাংকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর প্রায় তিন মাস পর গত ৯ সেপ্টেম্বর আইনজীবীকে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়। নিজের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আমরণ অনশনে যান ঝ্যাং। পরে জীবনাশঙ্কা দেখা দিলে কর্তৃপক্ষ নাকে পাইপ ঢুকিয়ে তাঁকে জোর করে খাবার গ্রহণ করায়।
ঝ্যাং ঝান গত ফেব্রুয়ারিতে উহানে যান। সেখান থেকে তিনি কতগুলো প্রতিবেদন করেন। এসব প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। এরপরই সরকারের রোষানলে পড়েন তিনি। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা চীনা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নেটওয়ার্ক অব চাইনিজ হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস (সিএইচআরডি) জানায়, আটক ঝ্যাং ঝান নিরপেক্ষ সাংবাদিক। গত ১৪ মে ঝ্যাং উহান থেকে হারিয়ে যান বলে জানিয়েছিল সংস্থাটি। এক দিন পর জানা যায়, ৪০০ মাইলের বেশি দূরের শহর সাংহাই থেকে তাঁকে আটক করেছে পুলিশ।
এরপর গত ১৯ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে ঝ্যাংকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর প্রায় তিন মাস পর গত ৯ সেপ্টেম্বর আইনজীবীকে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়। নিজের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আমরণ অনশনে যান ঝ্যাং। পরে জীবনাশঙ্কা দেখা দিলে কর্তৃপক্ষ নাকে পাইপ ঢুকিয়ে তাঁকে জোর করে খাবার গ্রহণ করায়। ১৮ সেপ্টেম্বর তাঁর আইনজীবী মুঠোফোনে একটি কল পান। তাঁকে জানানো হয়, ঝ্যাংকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়।
গত ১৬ নভেম্বর প্রকাশিত অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঝ্যাং ঝান লেখনী, ভিডিও ও অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করে উইচ্যাট, টুইটার ও ইউটিউবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে বিদেশি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে উহানের ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বাজেভাবে তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।