হংকংয়ের অণুজীববিজ্ঞানী ইউয়েন ওউক–ইউং বিশ্বের বেশ কিছু মারাত্মক হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে সার্স ভাইরাসের মতো বিপজ্জনক জীবাণু। তিনি সার্স ভাইরাস শনাক্ত ও অন্য ভাইরাস থেকে পৃথক করার ক্ষেত্রে কাজ করেছেন। এখন ইউয়েন নতুন আরেকটি মহামারি সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করেছেন।
করোনাভাইরাস মহামারির সময় যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি অনেকটাই পরিচিত মুখ ছিলেন। হংকংয়ের মৃদুভাষী বিজ্ঞানী ইউয়েনকে তাঁর সঙ্গে তুলনা করে হংকংয়ের ফাউচি বলা হয়। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, আরেকটি মহামারি অবশ্যম্ভাবী এবং তা করোনা মহামারির চেয়ে বেশি ক্ষতি করতে পারে।
হংকংয়ের কুইন ম্যারি হাসপাতালে কর্মরত এ বিজ্ঞানী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘বিশ্বের জনগণ ও নেতাদের এটা স্বীকার করে নিতে হবে যে আরেকটি মহামারি আসবে। তাঁরা যতটা ধারণা করতে পারেন, এর চেয়েও দ্রুত এ মহামারি চলে আসতে পারে।’
বিজ্ঞানী ইউয়েন বলেন, ‘আমি এ ধরনের ভয়ংকর পূর্বাভাস কেন দিচ্ছি? এর কারণ হচ্ছে আপনারা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন ভূরাজনীতি, অর্থনীতি ও জলবায়ু দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। রাজনীতিবিদদের দ্রুত বোধে ফিরতে হবে এবং বৈশ্বিক অস্তিত্ব হুমকির সমাধান করতে হবে।’
বিজ্ঞানী ইউয়েন তাঁর আত্মজীবনী মাই লাইফ ইন মেডিসিন: আ হংকং জার্নিতে এ সতর্কবার্তা দেন।
বিশ্বনেতারা এখন জাতীয় বা আঞ্চলিক স্বার্থে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ইউয়েন বলেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল জলবায়ু ও দ্রুতবর্ধিষ্ণু সংক্রামক ব্যাধি মোকাবিলায় সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
করোনাভাইরাস ও সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক স্বীকৃত কর্তৃপক্ষের একজন ইউয়েন। পঞ্চাশের দশকে জন্ম হংকংয়ের এই বিজ্ঞানীরা তিন ভাই। হংকংয়ের এক ছোট পরিবারে তাঁর বেড়ে ওঠা। ১৯৮১ সালে একটি মেডিকেল স্কুল থেকে তিনি স্নাতক সম্পন্ন করে। তিনি শহরের সরকারি হাসপাতালে কাজ করেছেন। ২০০৩ সালে তাঁর গবেষক দল সফলভাবে সার্স শনাক্ত করে।
ওই অভিজ্ঞতা তিনি কোভিড-১৯ মহামারির সময় কাজে লাগিয়েছিলেন। তিনি তাঁর আত্মজীবনীতে লিখছেন, ২০ বছরের গবেষণার সুফল আমরা করোনা মহামারির সময় পেয়েছিলাম। চীনের উহানের সামুদ্রিক মাছের বাজারকে করোনাভাইরাসের উৎস বলে মন্তব্য করে তিনি অভিযোগের মুখে পড়েছিলেন।
গত বছর ইউয়েন চীনে প্যান্ডেমিক রিসার্চ অ্যালায়েন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, যা ভবিষ্যৎ মহামারি নিয়ে গবেষণা করবে। ইউয়েন বলেন, ‘আমরা যদি আলোচনা না করি, তবে আরেকটি মহামারি আসবে এবং আবার আমাদের চড়া মূল্য দিতে হবে।’