শ্রীলঙ্কায় আবারও এক সপ্তাহের জন্য স্কুল বন্ধ
জ্বালানিসংকটকে কেন্দ্র করে আবারও এক সপ্তাহের জন্য স্কুলগুলো বন্ধ ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা। আজ সোমবার থেকে সব সরকারি ও রাষ্ট্র অনুমোদিত বেসরকারি স্কুলে এই ছুটি কার্যকর হবে। তবে শর্তসাপেক্ষে কিছু এলাকার স্কুল খোলা থাকবে। খবর এনআইএ’র।
শ্রীলঙ্কার শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন আগামীতে ছুটির দিনে স্কুলের সিলেবাস শেষ হবে।
গত ১৮ জুনও শ্রীলঙ্কার সরকার এক সপ্তাহের জন্য স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছিল। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী ‘দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে কলম্বো শহরের সব সরকারি ও সরকার অনুমোদিত বেসরকারি স্কুলগুলো এবং অন্য প্রদেশের বড় বড় শহরের স্কুলগুলো আগামী সপ্তাহে বন্ধ থাকবে।’
শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে মন্ত্রণালয়ের ঘোষণাটি প্রকাশ করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব নিহাল রানাসিংহে স্কুলগুলোকে অনলাইন ক্লাস চালিয়ে যেতে বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন, কমসংখ্যক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে বিভাগীয় পর্যায়ের স্কুলগুলোকে শর্তসাপেক্ষে সশরীরে ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। কোনো ধরনের পরিবহন ছাড়াই যেসব শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করতে পারবে শুধু তারাই স্কুলে যেতে পারবে।
নিহাল রানাসিংহে ঘোষণা করেছেন, পাবলিক ইউটিলিটিজ কমিশন অব শ্রীলঙ্কা (পিইউসিএসএল) সকাল ৮টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখবে যেন অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা যায়।
এ সময়ের উচ্চ–মধ্যম আয়ের দেশ শ্রীলঙ্কা চলতি বছরের মার্চে অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে। ১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর এটি দেশটির সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকট। বৈদেশিক মুদ্রার মজুতসংকটে দেশটির সরকার খাবার, ওষুধ ও জ্বালানির মতো নিত্যপণ্য আমদানি করতে পারছে না।
এই সংকটকে কেন্দ্র করে শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। একপর্যায়ে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। মে মাসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
গত মে মাসে শ্রীলঙ্কায় খাদ্যস্ফীতির পরিমাণ ৫৭ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের সংকট দেখা দিয়েছে। রান্না, পরিবহন, শিল্পকারখানাগুলো ব্যাপক জ্বালানি সংকটে আছে। চলছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
অর্থনৈতিক সংকটের কারণে খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি, জীবনযাপন এবং স্বাস্থ্যসেবার ওপর প্রভাব পড়ছে। সর্বশেষ ফসল কাটার মৌসুমে ৪০–৫০ শতাংশ খাদ্য উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় কম। বীজ, সার, জ্বালানি ও ঋণের ঘাটতি থাকায় বর্তমান চাষের মৌসুমও ঝুঁকিতে আছে।