যুক্তরাষ্ট্র–চীন যুদ্ধের আশঙ্কা সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা করছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক বিগত কয়েক দশকের মধ্যে এখন সবচেয়ে শীতল। এই দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘাতের ঝুঁকি পাঁচ বছর আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে।
আজ রোববার লি সেইন লুংয়ের সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচার করে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা প্রকাশ করলেও এই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, এখনই সংঘাত বেধে যাবে—এমনটা মনে করেন না তিনি।
কয়েক দশক ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় বাণিজ্যযুদ্ধ এবং করোনাভাইরাসের মহামারি নিয়ে পারস্পরিক দোষারোপে এই উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বিশ্বমঞ্চে চীনের প্রভাব বৃদ্ধির বিষয়টিও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়িয়েছে।
এই উত্তেজনার মধ্যেই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারে প্রতিযোগিতায় নেমেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। এ ছাড়া হংকং ও তাইওয়ান ইস্যুতে বেইজিংয়ের অবস্থান এবং জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে চীনের সমালোচনায় মুখর যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে, তারা চীনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পর্যালোচনা করবে। সব মিলিয়ে দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় শীতল।
সাক্ষাৎকারে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং বলেন, ‘আমার মনে হয়, পাঁচ বছর আগের তুলনায় (যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে) সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা এখন বেশি, তবে তা খুব বেশি নয়। তবে এভাবে চলতে থাকলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছাবে, যা একপর্যায়ে দুই দেশকে সংঘাতের পথেই নিয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘বিপর্যয় যদি ঘটে, তাহলে এটা (সামরিক সংঘাত) অপ্রত্যাশিতভাবেই শুরু হয়ে যাবে। আর যদি উভয় পক্ষ সতর্ক থাকে, তাহলে তা কোনো দিনও ঘটবে না।’
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ধনী নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব উল্লেখযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন—উভয়ের সঙ্গে দেশটির ভালো সম্পর্ক সিঙ্গাপুরের।
কাজেই এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনে সিঙ্গাপুর কোন পক্ষ নেবে—এমন এক প্রশ্নের জবাবে লি সেইন লুং বলেন, সিঙ্গাপুরের পক্ষে কোনো এক পক্ষকে বেছে নেওয়া সম্ভব নয়।