পরশু শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট অধিবেশন, আসতে পারে অনাস্থা প্রস্তাব
চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে আগামী বুধবার শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে। এ অধিবেশনে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হতে পারে। শ্রীলঙ্কার বিরোধী দল সমাগি জন বালাবেগায়া (এসজিবি) নেতা সাজিদ প্রেমাদাসা গত শনিবার এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর এএনআইয়ের।
গত ১১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে অভিশংসন ও দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন সাজিদ প্রেমাদাসা। কলম্বো পেজের খবর অনুযায়ী, গত শনিবার নিজ দল আয়োজিত এক কর্মসূচিতে প্রেমাদাসা বলেছেন, পার্লামেন্টের পরবর্তী অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন হতে পারে। আর বুধবার সে অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে।
গত ৩০ এপ্রিল পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার রঞ্জিত সিয়ামবালাপিতিয়া পদত্যাগ করেন। কলম্বো পেজের খবর অনুযায়ী, আগামী বুধবার পার্লামেন্টের অধিবেশনে নতুন ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করার কথা রয়েছে।
শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির (এসএলএফপি) পার্লামেন্ট সদস্য রঞ্জিত সিয়ামবালাপিতিয়া তাঁর দলের সিদ্ধান্ত অনুসারেই ডেপুটি স্পিকারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। এই শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি একসময় জোট সরকারের অংশ ছিল। পরে মাহিন্দা রাজাপক্ষের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় তারা।
সূত্রের বরাতে কলম্বো পেজ জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন দল পদুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি) ডেপুটি স্পিকার পদে দিলান পেরেরাকে মনোনীত করতে চাইছে। প্রধান বিরোধী দল এসজিবি তা চায় না।
ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনকভাবে কম। এ জন্য জ্বালানিসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না দেশটি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ বিদ্যুৎ থেকে বিচ্ছিন্ন। মূল্যস্ফীতি মাত্রা ছাড়িয়েছে। বাজারে পণ্য নেই। তাই কারফিউ উপেক্ষা করে মানুষ রাস্তায় রাস্তায় স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভে নেমেছে।
শ্রীলঙ্কার সেনসাস অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকসের বিবৃতি অনুযায়ী, চলতি এপ্রিলে ভোগ্যপণ্যের দাম আগের বছরের তুলনায় ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
জরুরি পণ্য আমদানির মূল্য পরিশোধের জন্য আগামী আট মাসে শ্রীলঙ্কার চার শ কোটি ডলার প্রয়োজন। সরকার ইতিমধ্যে ঋণ পরিশোধ স্থগিত রেখেছে। ভারত, চীন ও বিভিন্ন ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে সহায়তা চাইছে তারা।
এপ্রিলের শুরু থেকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বিরোধীদের দাবি, রাজাপক্ষে জনগণের আস্থা হারিয়েছেন। তবে তা নাকচ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। পরে প্রেসিডেন্ট মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়ে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট নতুন মন্ত্রিপরিষদ নিয়োগ দেন। তবে নতুন মন্ত্রিসভায়ও বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন তিনি। রাস্তায় যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা চান মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও গোতাবায়া রাজাপক্ষে দুজনই পদত্যাগ করুন।