নির্বাচনের আগপর্যন্ত আফগানিস্তানে অন্তর্বর্তী সরকার চায় যুক্তরাষ্ট্র
আফগানিস্তানে নতুন সংবিধান গ্রহণ এবং আগামী নির্বাচনের আগপর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তৈরি মার্কিন পরিকল্পনায় এমনটাই প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এ পরিকল্পনা নিয়ে দেশটির বিবদমান গোষ্ঠীগুলোর আপত্তি রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ওই শান্তি পরিকল্পনার একটি খসড়া হাতে পেয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গতকাল সোমবার সেটি পর্যালোচনা করে এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি, বিরোধী দল ও নাগরিক সমাজের নেতা এবং তালেবান মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে গত সপ্তাহে ‘ট্রানজিশনাল পিস গভর্নমেন্ট’ নামের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি জালমাই খলিলজাদ।
রয়টার্স জানায়, মার্কিন পরিকল্পনায় বলা হয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার চাইলে নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পার্লামেন্ট বাতিল করতে পারে বা তালিবান প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করে সেটির মেয়াদ বাড়াতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবনাটিতে আরও বলা হয়, আফগানিস্তান সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেবে না বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য নিজের ভূমি ব্যবহারের অনুমতি দেবে না, যা অন্যান্য দেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। তালেবানদেরও ‘প্রতিবেশী দেশগুলোতে’ আশ্রয় এবং তাদের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কাবুলের চারটি রাজনৈতিক সূত্র যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রস্তাবের বিষয়টি রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন। সূত্রগুলোর মধ্যে একজন হচ্ছেন আফগান প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। আফগান টিভি চ্যানেল টোলো নিউজসহ দেশটির অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনাটি নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিটি ধারণা আলোচনার টেবিলে রাখা আছে। প্রতিটি প্রস্তাবনা সেখানে আছে। এই প্রক্রিয়া অবশ্য আফগান নেতৃত্বের অধীনেই হবে।’
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তালেবানের একটি চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী আগামী ১ মের আগে আফগানিস্তানে রয়ে যাওয়া আড়াই হাজার মার্কিন সেনাকে দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে। কাজে সেই সময়সমীর আগেই আফগান শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করতে চায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।