ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত মিয়ানমার, তবু থামেনি জান্তা বাহিনীর বিমান হামলা
দুদিন আগে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে ১ হাজার ৬০০–এর বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দেশজুড়ে ভূমিকম্পের ধ্বংসচিত্র ছড়িয়ে আছে। ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেও দেশের যুদ্ধ বিক্ষুব্ধ অঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির জান্তা সরকার।
জাতিসংঘ একে সম্পূর্ণরূপে ‘জঘন্য এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলে বর্ণনা করেছে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুস বলেছেন, ভূমিকম্পের পর যখন মানুষ উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে, তখনো সেনাবাহিনী বোমাবর্ষণ করছে—এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।
টম অ্যান্ড্রুস মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে এখনই সব ধরনের সামরিক অভিযান বন্ধ করতে বলেছেন।
প্রায় চার বছর আগে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা পুনর্দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী।
গত শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মিয়ানমার। ভূমিকম্প আঘাত হানার তিন ঘণ্টার কম সময়ে স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উত্তরের রাজ্য শানের নাউংচোতে বিমান হামলা চালায় জান্তা বাহিনী। হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে বিবিসি বার্মিজ।
এ ছাড়া দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো উত্তর-পশ্চিমের সাগাইং অঞ্চলের চ্যাং-ইউ শহরে বিমান হামলার খবর দিয়েছে। সাগাইং ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল। জান্তা বাহিনীকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো লড়াই করে যাচ্ছে।
থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছের অঞ্চলগুলোতেও বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে।
মিয়ানমারের উৎখাত হওয়া বেসামরিক প্রশাসনের প্রতিনিধিত্ব করছে দ্য ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, তাদের সশস্ত্র বাহিনী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে দুই সপ্তাহের জন্য সামরিক অভিযান বন্ধ রাখবে। আজ রোববার থেকে তা শুরু হবে। তবে আক্রান্ত হলে তারা প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।
জান্তা সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের পর এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৪৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আরও বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।