ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ‘ব্যাপক’, মিয়ানমারের ছয় অঞ্চলে জরুরি অবস্থা

ব্যাংককে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর খোলা জায়গায় এসে আশ্রয় নেন আতঙ্কিত মানুষ। ২৮ মার্চ, ব্যাংকক, থাইল্যান্ডছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে আশপাশের দেশগুলো। মিয়ানমারে বিভিন্ন ভবন ও সেতুধসের পাশাপাশি পাশের দেশ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে একটি ৩০ তলা ভবন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্যমতে, আজ শুক্রবার দুপুরে (স্থানীয় সময় বেলা ১২টা ৫০ মিনিট) মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র মিয়ানমারের মান্দালয় শহর থেকে প্রায় ১৭ দশমিক ২ কিলোমিটার দূরে। এই শহরে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বসবাস।

মিয়ানমারে বড় ভূমিকম্পের পর রাজধানী নেপিডোর সড়কে ফাটল দেখা দেয়। এ ভূমিকম্পের পর অনেক ভবনেও ফাটল দেখা গেছে। কম্পনের সময় অনেক মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। ২৮ মার্চ
ছবি: এএফপি

এই ভূম্পিকম্প প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ–পশ্চিম চীনে অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের কেন্দ্রের কয়েক শ মাইল দূরের শহর ব্যাংককে নির্মাণাধীন ওই ৩০ তলা ভবন ধসে অন্তত ৭০ জন শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন।

মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের একজন উদ্ধারকর্মী বিবিসিকে বলেছেন, ভূমিকম্পে ‘ব্যাপক’ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং ‘অন্তত কয়েক শ’ মানুষ হতাহত হয়েছেন।

মান্দালয়ের একজন বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, ‘সবকিছু কাঁপছিল, তখন আমরা সবাই বাইরে বের হয়ে আসি। আমি চোখের সামনে একটি পাঁচতলা ভবন ধসে পড়তে দেখেছি। আমার শহরের সবাই বেরিয়ে রাস্তায় এসেছে। কেউ ভবনের ভেতরে ঢুকতে সাহস পাচ্ছে না।’

ভূমিকম্পে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরে ভবন ধসে পড়েছে। ইয়াঙ্গুন–মান্দালয় এক্সপ্রেসওয়ের একটি রেলসেতু ও একটি সেতু ধসে পড়েছে বলে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।

ছবিতে দেখা গেছে, ইরাবতী নদীর ওপরের আভা সেতু ধসে পড়েছে।

আরও পড়ুন
ভূমিকম্পে ব্যাংককে ধসে পড়া বহুতল ভবনের ধ্বংসস্তূপের সামনে মানুষ। ২৮ মার্চ, ব্যাংকক, থাইল্যান্ড
ছবি: রয়টার্স

ভূমিকম্পে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোর সড়কে ফাটল ধরেছে। দেশটির সামরিক সরকার অন্তত ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।

ভূমিকম্পের ১২ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার একটি পরাঘাত হয়েছে। এর কেন্দ্রও ছিল ভূমিকম্পের কেন্দ্রের কাছাকাছি।

ভূমিকম্প নিয়ে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দা সোয়ে লিন বলেন, তিনি প্রথম ভূমিকম্প একটি ‘বড় সময়’ ধরে অনুভব করেন। আরও পরাঘাত হতে পারে, সেই শঙ্কায় আছেন বাসিন্দারা।

ব্যাংককে বসবাসরত বিবিসির সাংবাদিক বুই থু জানান, ভূমিকম্পের সময় তিনি রান্না করছিলেন। পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম। আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম।’

আরও পড়ুন