লাওসে সরকারের সমালোচককে কফিশপে ঢুকে গুলি করে হত্যা
লাওস সরকারের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত এক তরুণকে হত্যা করা হয়েছে। গত শনিবার গভীর রাতে রাজধানী ভিয়েনতিয়েনে তাঁকে খুন করা হয়।
গত শনিবার রাতে একটি কফিশপে এক অস্ত্রধারী খুব কাছ থেকে আনাওসা ‘জ্যাক’ লুয়াংসুফমের (২৫) মুখ ও বুকে গুলি করে। তিনি ‘ক্লুয়েন ডুয়ে কি–বোর্ড (ড্রাইভেন বাই কি–বোর্ড) নামের একটি ফেসবুক পেজ চালাতেন। এ পেজে তাঁর অনুসারীরা কমিউনিস্ট সরকারের নানা নীতির সমালোচনা করে থাকেন।
এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার এখনো কোনো তদন্তের ঘোষণা না দেওয়ায় মানবাধিকার সংগঠনগুলো নিন্দা জানিয়েছে।
সিসিটিভিতে এ হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য ধরা পড়েছে। এতে দেখা যায়, মাথায় ক্যাপ ও বাদামি রঙের লম্বা জামা পরিহিত এক অস্ত্রধারী ক্যাফেতে ঢুকে আনাওসাকে পরপর দুটি গুলি করছে। এ সময় তিনি ক্যাফেতে বসা ছিলেন। আহতাবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) জানায়, লাওসে যে কজন মানুষ নিয়মিত ও প্রকাশ্যে সরকারের সমালোচনা করেন, তরুণ আনাওসা তাঁদের অন্যতম।
এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক এলাইন পিয়ারসন বলেন, সরকারের সমালোচনা করে এমন কেউ লাওসে নিরাপদ নন, এমন হিমশীতল বার্তা দিতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
একজন অ্যাকটিভিস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচারে সরকারের এমন ‘স্পষ্ট উদাসীনতার’ নিন্দা জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ।
সরকার এখনো সমালোচনার কোনো জবাব দেয়নি। আনওসার হত্যার খবর স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এইচআরডব্লিউ বলছে, সরকারের সমালোচক, মানবাধিবারকর্মী ও ভিন্নমতের রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় লাওস কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয় না।
প্রায় ১০ বছর আগে ‘জোরপূর্বক নিখোঁজ’ সোমবাথ সোমফোন কোথায় আছেন, ১০ বছর পরও অজানা রয়ে গেছে। ভিয়েনতিয়েন থেকে তাঁকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
এইচআরডব্লিউ ওড সায়াভংয়ের ঘটনাও উল্লেখ করেছে। ব্যাংককে বসবাসরত লাওসের এই অ্যাকটিভিস্ট ২০১৯ সালের আগস্ট থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
এই দুজনের নিখোঁজের বিষয়ে সরকার কিছু জানে না বলে দাবি করেছে। কমিউনিস্টশাসিত দক্ষিণ এশিয়ার এই দরিদ্র্য দেশে বিরোধী রাজনীতিক বা ভিন্নমতাবলম্বীদের কথা বলার মতো পরিস্থিতি নেই।
মার্কিন রাজনৈতিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ফ্রিডম হাউস বলছে, থাইল্যান্ড ও চীনের মাঝখানে স্থলবেষ্টিত দেশ লাওসে একদলীয় শাসন চলছে। লাও পিপলস’স রেভল্যুশনারি পার্টি দেশ চালাচ্ছে। সরকারের সমালোচকদের মুখ বন্ধ রাখতে কর্তৃপক্ষ আইনি বিধিনিষেধ আরোপ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।