কারাবন্দী সু চিকে গৃহবন্দী করা হতে পারে
মিয়ানমারের জান্তা সরকার দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিকে কারাগার থেকে বের করে রাজধানী নেপিডোতে গৃহবন্দী করে রাখা হতে পারে বলে গত বুধবার দুটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় নোবেলজয়ী অং সান সু চিসহ তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের।
বার্তা সংস্থা এপি (অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস) একজন অজ্ঞাতপরিচয় নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, আগামী সপ্তাহে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান আছে। এ উপলক্ষে বন্দীদের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শনের অংশ হিসেবে এটি করা হবে।
কারাগারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি বার্মিজ জানায়, সাধারণত সরকারি কর্মকর্তারা ব্যবহার করেন, এমন একটি বাড়িতে তাঁকে হয়তো ইতিমধ্যে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তবে রয়টার্স নিজেদের পক্ষ থেকে সু চি কোথায় আছে, তা যাচাই করতে পারেনি।
মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সেনা সরকারের মুখপাত্রকে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করার জন্য পাওয়া যায়নি। সু চির আইনজীবী ও ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের মুখপাত্রও এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেননি। মিয়ানমারে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা ‘এনইউজি’ নামে যে ছায়া সরকার গঠন করে।
এনইউজির মুখপাত্র কিয়াও জাও বলেন, ‘অবস্থানগত উন্নতির খবরকে স্বাগত জানাচ্ছি, কিন্তু বন্দী হিসেবে তাঁর অবস্থার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।’
দুর্নীতি ও নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে করা বেশ কয়েকটি মামলায় সু চি এখন ৩৩ বছরের সাজা ভোগ করছেন। তবে সু চি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অনেক পশ্চিমা সরকার সু চিসহ অন্যদের আটকে রাখার নিন্দা জানিয়ে তাঁদের মুক্তি দিতে আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে।
থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডন প্রামুদউইনাই ৯ জুলাই মিয়ানমার সফরকালে সু চির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পান। দুই বছরের বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথম কোনো বিদেশি কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান।
শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কয়েক দশক ধরে আন্দোলন চালিয়েছেন। রাজনৈতিক জীবনে বেশির ভাগ সময়ই তাঁকে বিভিন্ন সেনা সরকারের অধীনে বন্দিদশায় কাটাতে হয়েছে। ২০১৫ সালে মিয়ানমারে ৪৯ বছরের সেনা শাসনের অবসান হয়। ২০১৫ সালের নির্বাচনে সু চির নেতৃত্বাধীন দল নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে এবং সরকার গঠন করে। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আবার ক্ষমতা দখল করে জান্তারা।