এবার দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রস্তাব
দক্ষিণ কোরিয়ায় এবার প্রধানমন্ত্রী ও ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক সুকে অভিশংসিত করতে বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। দেশটির পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে অভিশংসিত করার দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এমন উদ্যোগ নেওয়া হলো।
দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা পার্ক চ্যান দায়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘হান নিজেকে একজন ভারপ্রাপ্ত বিদ্রোহী হিসেবে প্রকাশ করেছেন, একজন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়।’
ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনীত বিচারপতিদের সাংবিধানিক আদালতের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিতে হান অস্বীকৃতি জানানোর পর তাঁকে সরাতে তৎপরতা চালাচ্ছে বিরোধীরা।
বিরোধীরা আরও অভিযোগ করেছে, ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করার প্রচেষ্টায় ইউনকে সহযোগিতা করেছেন হান। অবশ্য ইউনের ওই উদ্যোগ থামাতে না পারায় ইতিমধ্যে ক্ষমতা চেয়েছেন হান।
সামরিক আইন জারির ঘোষণা নিয়ে ইউনের বিরুদ্ধে বিশেষ তদন্তের প্রস্তাবসহ বিরোধীদের নেতৃত্বে উত্থাপিত কয়েকটি বিলেও ভেটো দিয়েছেন হান। সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে সেটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল।
২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই অভিশংসন প্রস্তাবের বিষয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা। প্রস্তাবটি পাস হতে হলে পার্লামেন্টের ৩০০ সদস্যের মধ্যে ১৫১ জনকে এর পক্ষে ভোট দিতে হবে।
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৭০টিই ডেমোক্রেটিক পার্টির দখলে। আর ডেমোক্রেটিক পার্টিসহ গোটা বিরোধী দলীয় জোটের দখলে আছে ১৯২টি আসন।
বিরোধী দলগুলো আশা করেছিল, দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে হান তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবেন না এবং তিনি বিলগুলো পাসে সম্মতি জানাবেন।
তবে বিরোধী দলগুলোর সে আশা পূরণ হয়নি। এতে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব আরও গভীর হয়েছে।
গত মঙ্গলবার হান বিরোধী দলের তোলা দুটি বিল পর্যালোচনা না করেই মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ করেছেন। বিলগুলোতে ইউনের সামরিক আইন ঘোষণা এবং ফার্স্ট লেডি কিম কেওন হির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে বিশেষ কাউন্সেল তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিল বিরোধীরা।
চলতি মাসের শুরুর দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইউন সুক ইওল অভিশংসিত হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন হান। এবার হানকে অভিশংসিত করতে আইনপ্রণেতারা যদি ভোট দেন, তবে বর্তমান অর্থমন্ত্রী চোই সাং মক তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন।
ইউনকে স্থায়ীভাবে প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে নিষিদ্ধ করা হবে কিনা, সে বিষয়ে রায় জানাবেন সাংবিধানিক আদালত। চলতি সপ্তাহের শেষে দিকে এ ব্যাপারে আদালতে প্রথম শুনানি হওয়ার কথা।