দক্ষিণে পাঠানো উত্তর কোরিয়ার ২৬০ বেলুনে যা আছে
দক্ষিণ কোরিয়ায় অন্তত ২৬০টি বেলুন পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এসব বেলুনের ভেতরে ছিল ময়লা-আবর্জনা। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের নাগরিকদের ঘরের ভেতরে থাকতে আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
এই ধরনের ময়লা-আবর্জনার বেলুন পাঠানোকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন’ বলে মন্তব্য করে এসব সাদা রঙের বেলুন ও সেগুলোর সঙ্গে যুক্ত প্লাস্টিক ব্যাগ না ধরতেও নাগরিকদের সতর্ক করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী।
দক্ষিণ কোরিয়ার ৯ প্রদেশের ৮টিতে উত্তর কোরিয়ার এসব বেলুন পাওয়া গেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব বেলুনে যা পাওয়া গেছে, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে।
উভয় কোরিয়ার মধ্যে পাল্টাপাল্টি বেলুন পাঠানো নতুন কোনো ঘটনা নয়। ১৯৫০-এর দশকের কোরিয়া যুদ্ধের পর থেকে উভয় দেশ পাল্টাপাল্টি অপপ্রচারমূলক বেলুন পাঠিয়ে আসছে।
ইতিপূর্বে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী বলেছে, উত্তর কোরিয়ার পাঠানো বেলুনে কোনো ধরনের অপপ্রচারমূলক লিফলেট রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কিছুদিন আগে উত্তর কোরিয়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিল, তাদের সীমান্ত এলাকায় সম্প্রতি বেলুনে করে ঘন ঘন লিফলেট ও অন্য ময়লা-আবর্জনা পাঠানো হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে পাঠানো এসব লিফলেট ও ময়লা-আবর্জনা বেলুনের প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
গত রোববার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী দ্বিতীয় কিম ক্যাং বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত এলাকা ও অভ্যন্তরে শিগগির পরিত্যক্ত কাগজ ও ময়লা-আবর্জনার স্তূপ পাঠানো হবে। তখন তারা বুঝবে, এসব সরাতে কত পরিশ্রম করতে হয়।
এ পরিস্থিতে গত মঙ্গলবার বিকেলে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল ও সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষগুলোর তরফ থেকে বার্তা পায়। এতে তাঁদের ঘরের বাইরের কাজকর্ম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। তা ছাড়া ‘শনাক্ত করা যাচ্ছে না’, এমন কোনো জিনিস দেখলে নিকটস্থ সামরিক ঘাঁটি বা থানায় জানানোর জন্যও তাঁদের অনুরোধ করা হয়।
চলতি মাসের শুরুর দিকে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক অধিকারকর্মীদের একটি দল উত্তর কোরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ২০টি বেলুন পাঠায়। এসব বেলুনে উত্তর কোরিয়াবিরোধী অপপ্রচার, কোরীয় পপ সংগীতযুক্ত ইউনিভার্সাল সিরিয়াল বাস (ইউএসবি) এবং মিউজিক ভিডিও পাঠানো হয়।
এদিকে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে উত্তর কোরিয়াবিরোধী প্রচারপত্র পাঠানোকে অপরাধ ঘোষণা করে একটি আইন পাস করে দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্ট। কিন্তু সমালোচকেরা এই আইনের সমালোচনা করেন। তাঁদের শঙ্কা, এতে বাক্স্বাধীনতা ও মানবাধিকার খর্ব হতে পারে।
এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদের আঘাত করার লক্ষ্যে বেলুন পাঠিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। ২০১৬ সালে এ ধরনের বেলুনে টয়লেট পেপার, সিগারেটের অবশিষ্টাংশ, ময়লা-আবর্জনা পাঠিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। তখন এসব কিছুকে ‘বিপজ্জনক জৈব রাসায়নিক পদার্থ’ বলে বর্ণনা করেছিল উত্তর কোরিয়ার পুলিশ।