থাইল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে
থাইল্যান্ডে আজ রোববার সাধারণ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। নির্বাচনী দৌড়ে নির্বাসনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা এগিয়ে আছেন।
থাইল্যান্ডের স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ৯৫ হাজার কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রায় ৫ কোটি নিবন্ধিত ভোটার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ৫০০ সদস্যকে নির্বাচিত করতে ভোট দেবেন। প্রায় ২০ লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক ইতিহাসে কয়েক দফায় সামরিক অভ্যুত্থানের কবলে পড়া দেশটির জন্য এবারের নির্বাচনকে ঘুরে দাঁড়ানোর নির্বাচন বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। সেনা–সমর্থিত প্রধানমন্ত্রী প্রাউথ চান–ওচার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোকে লড়াই চালাতে হবে।
থাইল্যান্ডের সেনাপ্রধান ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রাউথ চান–ওচা সবশেষ ২০১৪ সালে হওয়া অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়ে আরও এক মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে চান তিনি। তবে সেনাবিরোধী দুটি দলের সঙ্গে তাঁর ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ সকালে থাই প্রধানমন্ত্রী ও ইউনাইটেড থাই নেশন পার্টির প্রার্থী প্রাউথ চান–ওচা ব্যাংককের একটি কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন।
বিভিন্ন জনমত জরিপ অনুযায়ী, নির্বাচনী দৌড়ে এগিয়ে আছে ফেউ থাই পার্টি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ৩৬ বছর বয়সী এ নারী তাঁর বাবার সমর্থকদের সমর্থন ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। থাইল্যান্ডের গ্রামীণ ও নিম্ন আয়ের অঞ্চলগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন তিনি।
টেলিযোগাযোগ খাতে ধনকুবের হিসেবে পরিচিত থাকসিন নিম্ন আয়ের অনেক থাই জনগণের কাছে জনপ্রিয়। বিরোধীরা থাকসিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পর ২০০৬ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। থাকসিন অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন। ২০০৮ সাল থেকে লন্ডন ও দুবাইয়ে নির্বাসনে আছেন তিনি।
৪২ বছর বয়সী সাবেক প্রযুক্তি নির্বাহী পিটা লিমজারোয়েনরাতের নেতৃত্বাধীন মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিও জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছে। দলটির তরুণ, প্রগতিশীল ও দৃঢ় মনোবলের প্রার্থীরা তাঁদের প্রচারণায় খুব সাধারণ কিন্তু শক্তিশালী একটি বার্তা দিয়েছেন। এটি হলো, থাইল্যান্ডের পরিবর্তন প্রয়োজন।
জনমত জরিপে ৬৯ বছর বয়সী প্রাউথ পিছিয়ে আছেন। ২০১৪ সালে থাকসিন সিনাওয়াত্রার বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করেছিলেন তিনি।
২০১৯ সালে থাইল্যান্ডে একটি নির্বাচন হয়েছিল। তবে ওই নির্বাচনের ফলাফলে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। কয়েক সপ্তাহ পর সেনা–সমর্থিত একটি দল সরকার গঠন করে এবং প্রাউথকে তাদের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। প্রক্রিয়াটিকে অন্যায্য উল্লেখ করে তখন ক্ষোভ জানিয়েছিল বিরোধী দল।
এবারের নির্বাচনে প্রায় ৭০টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি বড় দল আছে। ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবে না।