অ্যাডাল্ট সাইটে ছবি দেওয়ায় মিয়ানমারে মডেল ও বিক্ষোভকারী সানের কারাদণ্ড
মিয়ানমারে এক নারীকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির জান্তা সরকারের একটি আদালত। ‘অনলিফ্যানস’ নামে একটি অ্যাডাল্ট সাইটে ছবি প্রকাশ করায় তাঁকে এই সাজা দিয়েছেন আদালত। খবর বিবিসির।
জান্তা সরকার বলছে, মডেল ও সাবেক চিকিৎসক নাং মোয়ে সানের বিরুদ্ধে দুই সপ্তাহ আগে ‘সংস্কৃতি ও মর্যাদা ক্ষুণ্নের’ অভিযোগ তোলা হয়।
গত বছর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে জান্তা সরকার। সে সময় জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন নাং মোয়ে সান। অনলিফ্যানস-এ ছবি প্রকাশ করায় মিয়ানমারে সানকেই প্রথম সাজা দেওয়া হলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত আগস্ট মাসে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করায় থিনজার উইন্ট কিয়াও নামে আরেক মডেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁকেও একই আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এ মাসে উইন্ট কিয়াওকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
অর্থের বিনিময়ে সামাজিক মাধ্যমের সাইটে নিজের নগ্ন ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করার দায়ে সানকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মিয়ানমারের ইলেকট্রনিকস ট্রানজেকশন আইনের ৩৩ (এ) ধারার অধীনে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এ আইনে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
সান ইয়াঙ্গুনের নর্থ ডাগন টাউনশিপে থাকতেন। সেখানে এখন সামরিক আইন চালু রয়েছে। এ ধরনের এলাকায় এ বছরের শুরুতে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের নবায়ন করা জরুরি আইনের অধীনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সামরিক আদালতে বিচার করা হয়। এসব আদালতে আসামি তাঁর পক্ষে কোনো আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ পান না।
ইনসেইন প্রিজন কোর্টে মডেল সানের বিচারকাজ হয়েছে। তাঁকে ইয়াঙ্গুনের কুখ্যাত ও মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় কারাগারে পাঠানো হবে। গত বছর সেনা অভ্যুত্থানের সময় থেকে সেখানে অনেক রাজনৈতিক বন্দী রয়েছেন।
সানের মা বিবিসি বার্মিজ সার্ভিসকে বলেছেন, তিনি কিছুদিন আগে তাঁর মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন। তবে স্থানীয় সময় গত বুধবার সামরিক সরকারের গণমাধ্যম নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তিনি মেয়ের সাজার বিষয়ে কিছু জানতেন না।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। এরপর দেশটিতে জান্তা সরকারবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ হয়।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী সু চিকে দুর্নীতি, সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে উসকানি, করোনার বিধিনিষেধ লঙ্ঘন এবং টেলিকমিউনিকেশন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর সু চি ও তাঁর রাজনৈতিক, অধিকারকর্মী, সাংবাদিকসহ মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ হাজার ৬০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।