থাইল্যান্ডে বায়ুদূষণ, দুই লাখ মানুষ হাসপাতালে
থাইল্যান্ডে বায়ুদূষণের কারণে চলতি সপ্তাহেই প্রায় দুই লাখ মানুষ নানা সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। রাজধানী ব্যাংকক শহরসহ সারা দেশে ঘন কুয়াশার মতো আবহাওয়া বিরাজ করছে। শিল্পক্ষেত্রের নির্গমন, কৃষিজ বিষয় পোড়ানো ও যানবাহনের ধোঁয়ার বিপজ্জনক মিশ্রণের কারণে ভয়াবহ এ বায়ুদূষণ ঘটছে।
দেশটির জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের ক্রমবর্ধমান মাত্রা থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য পরিসেবার ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে। বায়ুদূষণের কারণে চলতি বছরের শুরু থেকে ১৩ লাখেরও বেশি মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আর চলতি সপ্তাহেই প্রায় দুই লাখ মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বায়ুদূষণের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহর হলো রাজধানী ব্যাংকক। গত শনিবার জনপ্রিয় এ পর্যটন শহরটি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘আইকিউএয়ার’–এর তালিকায় বিশ্বের তৃতীয় দূষিত শহর হিসেবে স্থান পেয়েছে।
জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসক ক্রিয়াংক্রাই নামথাইসোং এ পরিস্থিতিতে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের বাড়ির ভেতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ, ব্যাংককের প্রায় ৫০টি জেলায় বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর সূক্ষ্ম বস্তুকণা পিএম-২.৫-এর পরিমাণ অনিরাপদ।
সূক্ষ্ম বস্তুকণা পিএম-২.৫ রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি করার ক্ষমতার কারণে সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়। ব্যাংককের ৫০টি জেলায় এর যে মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত নির্দেশিকা অতিক্রম করেছে।
উত্তরাঞ্চলীয় শহর চিয়াং মাই একটি কৃষিভিত্তিক অঞ্চল। এ অঞ্চলে খড় পোড়ানোর কারণেও বায়ু দূষিত হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাংককের গভর্নর চাদচার্ট সিত্তিপুন্টের মুখপাত্র একভারুন্যু আম্রপালা ঘোষণা করেছেন, পরিস্থিতির অবনতি হলে আবারও হোম অফিসের আদেশ জারি করা হবে। কেউ বাইরে গেলে দূষণরোধী উন্নতমানের এন–৯৫ মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
আম্রপালা বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য কর্তৃপক্ষ নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। ব্যাংককের নার্সারি স্কুলে শিশুদের সুরক্ষার জন্য বায়ু পরিশোধনকারী ‘নো ডাস্ট রুম’ স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া যানবাহনের কালো ধোঁয়া নিরীক্ষণের জন্য চেকপয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এ সমস্যা মোকাবিলায় আরও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। জনসাধারণের বাড়ি থেকে কাজ করা উচিত। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য স্কুলের শিশুদেরও বাইরে বের না হওয়া উচিত।