ভিয়েতনামের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নারী ধনকুবের লানের মৃত্যুদণ্ড বহাল

আদালতে ট্রুং মি লান,৩ ডিসেম্বরছবি: এএফপি

ভিয়েতনামে আবাসন খাতের ধনকুবের ট্রুং মি লানের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে দেশটির আদালত। আজ মঙ্গলবার লানের আপিল আবেদনটি খারিজ করে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমসূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

আবাসন কোম্পানি ভান থিন ফাত হোল্ডিংস গ্রুপের চেয়ারপারসন লান। গত এপ্রিলে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও ঘুষগ্রহণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে এ নারী ধনকুবেরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এটিকে ভিয়েতনামের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আর্থিক জালিয়াতিসংক্রান্ত মামলা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ভিয়েতনামের সংবাদপত্র ভিএনএক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় হো চি মিন সিটির দ্য হাই পিপলস কোর্ট লানের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার ব্যাপারে অনড়। আদালত মনে করেন, মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।

আরও পড়ুন

ওই প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, লান যদি আত্মসাৎ করা অর্থের তিন-চতুর্থাংশ ফিরিয়ে দিতে পারেন, তবে সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

ভিয়েতনামে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকজন বিখ্যাত ব্যবসায়িক নির্বাহী এবং সরকারি কর্মকর্তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। লান তাঁদেরই একজন।

দুর্নীতিবিরোধী ওই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ব্লেজিং ফারনেস।

আজ মঙ্গলবার আপিল শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘লান যা করেছেন, তা মামলামোকদ্দমার ইতিহাসে নজিরবিহীন। আর তিনি যে পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, তা বড় অঙ্কের এবং পুনরুদ্ধারযোগ্য নয়।’ প্রসিকিউশনকে উদ্ধৃত করে ভিয়েতনামের রাষ্ট্র পরিচালিত অনলাইন সংবাদপত্র ভিয়েতনামনেট এ তথ্য জানিয়েছে।

আসামির কর্মকাণ্ডের কারণে সমাজ, আর্থিক বাজার এবং অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব পড়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

লানের আইনজীবীর বরাত দিয়ে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, লান অপরাধ স্বীকার করা, অনুশোচনা দেখানো এবং আত্মসাৎ করা অর্থের কিছু অংশ ফেরত দেওয়াসহ আরও পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, যা বিবেচনা করে সাজা কমানো যেত। তবে কৌঁসুলিরা বলেছেন, এগুলো যথেষ্ট নয়।

এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে লানের আইনজীবীর বক্তব্য জানতে পারেনি রয়টার্স।
তবে ভিয়েতনামে পুনর্বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় এখনো লানের রিভিউ আবেদন করার সুযোগ আছে।

২০২২ সালে জালিয়াতির অভিযোগে লান গ্রেপ্তার হন। এ জালিয়াতির কেন্দ্রে আছে সাইগন কমার্শিয়াল ব্যাংক। প্রক্সি হিসেবে কাজ করা ব্যক্তির মাধ্যমে লান আসলে সাইগন কমার্শিয়াল ব্যাংকের সিংহভাগের মালিক ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও গত অক্টোবরে ভিন্ন একটি মামলার রায়ে লানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সম্পত্তি আত্মসাৎ এবং অর্থপাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে এ সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।