রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার কিছু ব্যক্তি, সংস্থা ও জাহাজের ওপর একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘন করে উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ার অস্ত্র সংগ্রহের অভিযোগে আজ শুক্রবার এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, পিয়ংইয়ং ও মস্কোর মধ্যে অস্ত্র–বাণিজ্য ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে উত্তর কোরিয়ার সাত ব্যক্তি এবং রাশিয়ার দুটি জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, যে দুটি জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেগুলোতে করে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে বিপুলসংখ্যক কনটেইনার আনা-নেওয়ার কাজ চলে। এসব কনটেইনারে করে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়, যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে অস্ত্র দিচ্ছে উত্তর কোরিয়া। মস্কো ও পিয়ংইয়ং এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। যদিও দেশ দুটি গত বছর নিজেদের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক জোরদারের অঙ্গীকার করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, সিরিয়ায় উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় একটি কোম্পানির প্রতিনিধিত্বকারী একজন উত্তর কোরীয় নাগরিক ২০২২ ও ২০২৩ সালের মধ্যে রাশিয়াভিত্তিক ভাগনার গ্রুপের এক সদস্যের সঙ্গে অস্ত্র–বাণিজ্য সংক্রান্ত আলোচনা করেছিলেন। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের তৈরি করা এক বার্ষিক প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কথা বলেছে।
মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, একটি রুশ কোম্পানিতে নিযুক্ত অপর এক ব্যক্তি রাশিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ায় ডিজেল স্থানান্তরের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। উভয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিবৃতি অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা অপর পাঁচ উত্তর কোরীয় নাগরিক পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য তহবিল সংগ্রহে ভূমিকা রেখেছেন।
রাশিয়া গত মাসে তাদের নাগরিক ও সংস্থার ওপর দক্ষিণ কোরিয়ার নিষেধাজ্ঞাকে ‘বিরাগপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। যথাসময়ে এর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
এদিকে জাপানও রাশিয়ার ১১টি সংস্থা ও এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। ইউক্রেনে অভিযান চালাতে রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার কাজে এসব সংস্থা এবং ওই ব্যক্তি জড়িত বলে অভিযোগ টোকিওর।
জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে রাশিয়ার অস্ত্র সংগ্রহ করার বিষয়টি জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবের লঙ্ঘন। প্রস্তাবে উত্তর কোরিয়া থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহ এবং দেশটিকে অস্ত্রশস্ত্র ও উপকরণ সরবরাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে ২০০৬ সাল থেকে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আছে উত্তর কোরিয়া। পরবর্তী বছরগুলোতে এসব পদক্ষেপ জোরদার করতে দেখা গেছে।