মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২২৬
মিয়ানমারে টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ২২৬ জনে পৌঁছেছে। দেশটিতে ৬ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষের সাহায্য দরকার বলে সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এক সপ্তাহের বেশি সময় আগে উত্তর ভিয়েতনাম, লাওস, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারে আঘাত হানে টাইফুন ইয়াগি। শক্তিশালী বাতাস এবং ব্যাপক বৃষ্টির কারণে বন্যা ও ভূমিধস হয়েছে। এর ফলে অঞ্চলটিতে পাঁচ শর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি তথ্যে জানা গেছে।
মিয়ানমারের জান্তাশাসিত রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে গতকাল সোমবার রাতে ২২৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ ৭৭ জন।
সম্প্রচারমাধ্যমটি আরও জানায়, বন্যায় প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমির ধান ও অন্যান্য শস্য নষ্ট হয়ে গেছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় বিষয়ক দপ্তর (ইউএনওসিএইচএ) জানায়, মিয়ানমারজুড়ে আনুমানিক ৬ লাখ ৩১ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ইউএনওসিএইচএ বলেছে, মিয়ানমারে জরুরি ভিত্তিতে খাবার, পানি, আশ্রয় ও পোশাক প্রয়োজন। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, অবরুদ্ধ সড়ক, ক্ষতিগ্রস্ত সেতুসহ সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় ত্রাণ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
দুর্বল যোগাযোগব্যবস্থার কারণে হতাহতের তথ্যও আসছে ধীরগতিতে। বিশেষ করে দুর্গম এলাকায় এ সমস্যা বেশি।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি গতকাল বলেছে, মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। তবে বন্যা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেনি সংস্থাটি।
এরই মধ্যে বিদেশি সহায়তার আবেদন জানিয়েছে জান্তা। কোনো সংকটে এভাবে বিদেশি সহায়তা চাওয়ার ঘটনা দেশটিতে সচরাচর দেখা যায় না। কেননা এর আগে বিদেশি সহায়তা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে জান্তার। তবে এ পর্যন্ত শুধু প্রতিবেশী দেশ ভারত এ আবেদনে সাড়া দিয়েছে। শুকনা খাবার, পোশাক, ওষুধসহ ১০ টন সামগ্রী পাঠিয়েছে দেশটি।
টাইফুন ইয়াগিতে থাইল্যান্ডে এ পর্যন্ত ১০ জন এবং লাওসে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, টাইফুনে ভিয়েতনামে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯২ জনে। নিখোঁজ আছেন ৩৮ জন। ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে ২ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর জমির ফসল।
ইয়াগি চলতি বছর এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন। বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এটি মিয়ানমার থেকে সরে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে আগামী সপ্তাহে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে আরেকটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।