মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা
মিয়ানমারে গত শুক্রবার ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
মিয়ানমারের জান্তা সরকার চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছিল, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। গত শুক্রবার ঠিক এই সময়ে মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার তথ্যমতে, শুক্রবারের ভূমিকম্পে দুই হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশির ভাগই মারা গেছেন দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে। ওই শহরে বিধ্বস্ত এলাকায় উদ্ধার কাজ চলছে।
৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মিয়ানমারের সাগাইং ও মান্দালয় শহরে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু জান্তাশাসিত মিয়ানমারে হালনাগাদ তথ্য পাওয়ার গতি খুবই ধীর।
মিয়ানমার–থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষ বলছেন, বাড়িঘরে ফিরতে তাঁরা ভয় পাচ্ছেন। কারণ, সেখানে বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই। শৌচকাজ সারানোর মতো কোনো অবস্থা নেই।
বিবিসির সংবাদদাতা বলেন, তিনি মান্দালয়ে রয়েছেন। তাঁদের একটি দল গত রাতে এখানে এসেছেন। বিবিসির দলটি যেদিন মান্দালয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিল, তার পুরো এক দিন পর তাঁরা সেখানে পৌঁছাতে পেরেছেন।
বিবিসির ওই সংবাদদাতা আরও বলেন, ‘যখন আমরা শহরের মধ্য দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন পুরো শহর অন্ধকারে ঢাকা পড়েছিল। এখানে বিদ্যুৎ নেই, খাওয়ার পানি নেই এবং আমরা এমনকি কোনো শৌচাগার খুঁজে পাইনি।
মান্দালয় যাওয়ার আগে তাঁরা কোনো হোটল কক্ষ ‘বুক’ করতে পারেননি। তাই তাঁরা গাড়িতেই ঘুমানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। যদিও সেখানে গিয়ে একটু খোঁজাখুঁজির পর তাঁরা একটি হোটেল পেয়ে যান। কিন্তু সেখানে কোনো খাবার ছিল না, তাই তাঁরা অন্য কোথাও চেষ্টা করেন। অল্প কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও সেগুলোর সমানে মানুষের লম্বা লাইন ছিল এবং প্রচুর হাউকাউ হচ্ছিল। সেখানে কোনো ইন্টারনেটও ছিল না।
শেষ রাতের দিকে বড় ধরনের পরাঘাতে মান্দালয় আবার কেঁপে ওঠে। বিবিসির দলটি হোটেলে অবস্থান করা নিরাপদ মনে করেনি। তাই তাঁরা কাছের একটি উপাসনালয়ে আশ্রয় নেন। সকালের আলোয় তাঁরা দেখতে পান পুরো মান্দালয় ধ্বংসের নগরী হয়ে আছে।