স্বীকৃতি দিতে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান তালেবানের
আফগানিস্তানের বর্তমান সরকারকে প্রথম আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তালেবানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলকারী তালেবানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী আজ বুধবার মুসলিম দেশগুলোর প্রতি এ আহ্বান জানান।
গত ১৫ আগস্ট কাবুলের পতন হয়। কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দ্বিতীয়বারের মতো তালেবানের হাতে যায়। পরের মাসে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় তালেবান।
বিশ্বের কোনো দেশ এখন পর্যন্ত তালেবানের সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। দ্বিতীয় দফায় তালেবান কীভাবে দেশ শাসন করছে, সেদিকে নজর রাখছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব আগেই ঘোষণা দিয়েছে, তালেবানের কথা নয়, বরং কাজের ওপর তারা গভীরভাবে দৃষ্টি রাখছে। কাজের ভিত্তিতেই তারা ভবিষ্যতে তালেবানকে মূল্যায়ন করবে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান শাসন করে তালেবান। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের হামলায় ২০০১ সালে তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হয়। সশস্ত্র সংগঠনটি তাদের ক্ষমতার প্রথম দফায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বিশ্বজুড়ে কুখ্যাতি অর্জন করে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত সরকার হটিয়ে দ্বিতীয় দফায় আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর তালেবান আগের কট্টর শাসনব্যবস্থা থেকে সরে আসার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রয়ে গেছে। সরকারি চাকরি থেকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর বেশির ভাগই বন্ধ রয়েছে।
আফগানিস্তান সাহায্যনির্ভর দেশ। তালেবান ক্ষমতা দখলের পর পশ্চিমা দেশগুলো আফগানিস্তানের জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্য স্থগিত করে। দেশটির বিদেশে থাকা সম্পদে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে আফগানিস্তান একটি মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
আফগানিস্তানের চরম অর্থনৈতিক সংকট তুলে ধরতে কাবুলে আজ একটি সম্মেলন করেন হাসান আখুন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মুসলিম দেশগুলোকে নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাই। তারপর আমি আশা করি, আমরা দ্রুত দেশকে বিকশিত করতে সক্ষম হব।’
কূটনৈতিক স্বীকৃতির কথা উল্লেখ করে হাসান আখুন্দ বলেন, ‘আমরা কারও সাহায্য চাই না। আমরা আমাদের কর্মকর্তাদের জন্য এটা চাই না। আমরা এটা আমাদের জনসাধারণের জন্য চাই।’
তালেবানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, আফগানিস্তানে শান্তি ও নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করে তালেবান স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব শর্তই পূরণ করেছে।