তাইওয়ান নিয়ে সি চিন পিংকে ফোন বাইডেনের
তাইওয়ান প্রসঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাঁরা তাইওয়ান চুক্তি মেনে চলতেও সম্মত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
তাইপে ও বেইজিংয়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার তাইওয়ান নিয়ে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করার কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বাইডেন বলেন, ‘আমি সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তাইওয়ান নিয়ে কথা বলেছি। আমরা সম্মত হয়েছি...তাইওয়ান চুক্তি মেনে চলব।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনি (চীনা প্রেসিডেন্ট) চুক্তির অন্যথা করবেন না।’
বাইডেন ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের ‘এক চীন নীতি’র কথাই বলেছেন, যার আওতায় তাইপের পরিবর্তে বেইজিংকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন।
তাইওয়ান সম্পর্ক চুক্তি বা ‘তাইওয়ান রিলেশনস অ্যাক্ট’ অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র বেইজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখবে। আর তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ শান্তিপূর্ণ উপায়ে নির্ধারিত হবে।
বেইজিং ও তাইপের উত্তেজনার মধ্যেই মিশিগান সফর শেষে হোয়াইট হাউসে ফিরে সাংবাদিকদের কাছে সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তাইওয়ান নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা জানান বাইডেন।
তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে মনে করে চীন। কিন্তু তাইওয়ান দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে আসছে।
চলমান উত্তেজনার জন্য বেইজিংকে দোষারোপ করে আসছে তাইওয়ান। অন্যদিকে, তাইওয়ানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে চীন।
তাইওয়ানের আকাশসীমায় চীনা যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশ নিয়ে তাইপে প্রায়ই অভিযোগ করে আসছে। বিবিসির খবরে বলা হয়, গত কয়েক দিনে তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা সীমানায় প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে চীন।
সবশেষ পাঠানো বিমানবহরে ৩৪টি জে-১৬ যুদ্ধবিমান ও পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ১২টি এইচ-৬ বোমারু বিমান ছিল বলে অভিযোগ তাইওয়ানের। স্থানীয় সময় গত সোমবার চারটি চীনা যুদ্ধবিমান প্রাতাস দ্বীপের পাশ দিয়ে উড়ে যায়। তাইওয়ান সরকারের দাবি, প্রাতাস দ্বীপ তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা।
যুক্তরাষ্ট্র গত রোববার চীনকে তাইওয়ানের কাছাকাছি বেইজিংয়ের সামরিক তৎপরতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘তাইওয়ানের কাছে চীনের উসকানিমূলক সামরিক তৎপরতার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। এতে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হচ্ছে। ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’
গত ৯ সেপ্টেম্বর জো বাইডেন ও সি চিন পিং প্রায় দেড় ঘণ্টা ফোনালাপ করেন। সেই ফোনালাপের পর একটি বিবৃতি প্রকাশ করে হোয়াইট হাউস। এতে বলা হয়, ফোনালাপে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কৌশলগত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। যেসব ক্ষেত্রে দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে, তার পাশাপাশি যেসব ক্ষেত্রে দুই দেশের স্বার্থ, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গিতে ভিন্নতা রয়েছে, সেগুলো নিয়ে তাঁদের কথা হয়েছে।