তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছাড়া পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার পর আবার গ্রেপ্তার

তিউনিসিয়ার আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আয়াচি জামেলছবি: এক্স থেকে নেওয়া

তিউনিসিয়ার আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আয়াচি জামেল কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর আবারও গ্রেপ্তার হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।

আগামী ৬ অক্টোবর তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে। এই নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ ছাড়াও যে দুজন প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশন অংশগ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে, তাঁদের একজন আয়াচি জামেল (৪৩)।

ব্যালটে স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে গত সোমবার আয়াচি জামেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। চার দিন হাজতবাস শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী তিউনিসের অদূরে মানৌবা শহরের একটি আদালত তাঁকে অস্থায়ী জামিন দেন।

জামেলের আইনজীবী আবদেসাত্তার মাসুদি বলেন, আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ছাড়া পান আয়াচি জামেল। এরপর ব্যালটে স্বাক্ষর জাল করার একই অভিযোগে আজ সকালে তাঁকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়। আজকের মধ্যেই আয়াচি জামেলকে আবার আদালতে তোলা হবে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী আব্দেসাত্তার মেসাউদি।

আয়াচি জামেল দেশটির সাবেক সংসদ সদস্য ও একজন ব্যবসায়ী। গত আগস্টের শেষ পর্যন্ত আজিমন নামে উদারপন্থী হিসেবে পরিচিত দেশটির একটি ছোট রাজনৈতিক দলের প্রধান ছিলেন তিনি। তবে আগস্টের শেষে এসে আয়াচি জামেল দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন।

তিউনিসিয়ার নির্বাচন কমিশন আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টা পর আয়াচি জামেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত তালিকায় থাকা তিন প্রার্থী হলেন আয়াচি জামেল, বর্তমান প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ ও জওহেইর মাগাজাউই নামে সাবেক একজন সংসদ সদস্য।

তবে সেই তালিকা থেকে আদালতের রায়কে উপেক্ষা করে আরও তিনজনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কর্তৃপক্ষের এই প্রাথমিক যাচাই–বাছাই থেকে তারা বাদ পড়ায় তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এরপর আদালত তাদের আপিলের অনুমতি দেন। এই তিনজন হলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মোনসেফ মারজাউকির উপদেষ্টা ইমেদ দাইমি, সাবেক মন্ত্রী মনধের জেনাইদি এবং বিরোধীদলীয় নেতা আবদুল লতিফ মেক্কি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদের বিরুদ্ধে তাদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

এবাবের নির্বাচনেও এখন মূল প্রার্থী সাইদ। তিনি ২০১৯ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসেন। ২০২১ সালে একচেটিয়াভাবে দেশটির সার্বিক ক্ষমতা দখল করেন। এরপর থেকে ডিক্রি দ্বারা শাসন করেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বলেছে, জামেলের গ্রেপ্তার ও তিনজন সম্ভাব্য প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার মধ্য দিয়ে উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে ‘গণতন্ত্রের জায়গাটিকে ক্রমাগত সীমাবদ্ধ’ করে তোলা হচ্ছে, তা প্রতীয়মান হয়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, নির্বাচনের দৌড়ে অন্তত আটজন সম্ভাব্য প্রার্থীকে ‘বিচারের মুখোমুখি করে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে বা কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’ মানবাধিকার সংগঠনটি গত বুধবার বলেছে, নির্বাচন কর্তৃপক্ষ আইএসআইই ‘সাইদের পক্ষে কাজ করছে।’