নোয়াম চমস্কির সাক্ষাৎকার
জলবায়ু সংকট: এখনো সব শেষ হয়ে যায়নি
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বাড়ছে, বিশ্বজুড়ে দেখা দিচ্ছে চরম আবহাওয়া। তীব্র দাবদাহ, বন্যা আর মৃত্যুই এখন প্রধান খবর। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলার যুদ্ধে কি পৃথিবী হেরে যাচ্ছে? এর তাৎপর্যকে কি অস্বীকার করা হচ্ছে, এই নিষ্ক্রিয়তাই–বা কেন? মুক্তির উপায় কী? এসব প্রশ্ন নিয়ে বিশ্বখ্যাত চিন্তক নোয়াম চমস্কির মুখোমুখি হয়েছিল মার্কিন গণমাধ্যম ট্রুথ আউট।
মার্কিন ভাষাতত্ত্ববিদ নোয়াম চমস্কি বর্তমানে এমআইটির ইমেরিটাস অধ্যাপক, ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার ভাষাবিজ্ঞানের লরিয়েট প্রফেসর। বিভিন্ন বিষয়ে নোয়াম চমস্কির প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দেড় শতাধিক। সাংবাদিক সি জে পলিক্রনিউর নেওয়া এই সাক্ষাৎকার গত ২৯ জুলাই প্রকাশিত হয়। সাক্ষাৎকারটি অনুবাদ করেছেন সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম।
বিশ্বনেতারা হয়তো এবার বুঝবেন, কী ভয়ানক পরিস্থিতি তাঁরা তৈরি করছেন।
মর্নিং টিভির বছরজুড়ে জলবায়ু সংকটের খবর প্রচার ২৬৭ মিনিট।
এক দিনেই জেফ বেজোসের মহাকাশ ভ্রমণের খবর প্রচার ২১২ মিনিট।
ধনী রাষ্ট্রগুলোর টিকা মজুত শুধু অনৈতিক নয়, আত্মবিধ্বংসী।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবও দেশের সীমানা মানে না।
প্রশ্ন :
সি জে পলিক্রনিউ: প্রতিদিনই জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব সামনে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন অংশে তীব্র দাবদাহ হচ্ছে, এমনকি তাপমাত্রা উঠছে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর। ভয়াবহ বন্যায় পশ্চিম ইউরোপে প্রায় ২০০ জন মারা গেছেন, নিখোঁজ কয়েক শ মানুষ। মস্কো ইতিহাসের দ্বিতীয় উষ্ণতম জুন পার করেছে। বস্তুত চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি দেখে আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরাও। যেসব মডেলের ভিত্তিতে পূর্বাভাস দেওয়া হতো, সেগুলোর যথার্থতা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। এসব বিষয়ে আপনার ভাবনা কী? দেখা যাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণায়নবিরোধী লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছে পৃথিবী।
নোয়াম চমস্কি: আপনার হয়তো মনে আছে, তিন বছর আগে অক্সফোর্ডের পদার্থবিদ রেমন্ড পিয়েরেহামবার্ট লিখেছিলেন, ‘এখন আতঙ্কিত হওয়ার সময় এসেছে। আমরা ঘোর বিপদে আছি।’ সম্প্রতি প্রকাশিত ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) প্রতিবেদনের লেখকদের নেতৃত্বে ছিলেন রেমন্ড পিয়েরেহামবার্ট।
এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে, তাতে সতর্কবার্তাই তীব্রতর হচ্ছে। গত জুনে আইপিসিসি প্রতিবেদনের একটি খসড়া এএফপির হাতে গিয়েছিল। সেখানে কতগুলো বিষয়ে চূড়ান্ত সীমার তালিকা দেওয়া হয়েছিল, যেগুলোর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বিশ্ব। সেই সময়ের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল অনিবার্য পরিণতির কথাও। ওই খসড়া তৈরি হয়েছিল এই গ্রীষ্মের চরম আবহাওয়া আসার আগেই। এটাই বিজ্ঞানীদের আরও বেশি অবাক করছে। কয়েক দশক আগে পরিবেশবিজ্ঞানী মাইকেল মান যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে চরম আবহাওয়ার মিল রয়েছে। কিন্তু এই অবস্থা ওই পূর্বাভাসকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এর কারণ হতে পারে, বায়ুমণ্ডলের যে উষ্ণায়ন, তা পরিবেশসংক্রান্ত গবেষণায় স্থানই পায়নি।
এসব ভীতিকর খবরের একটা ভালো দিকও আছে। এতে বিশ্বনেতারা হয়তো বুঝতে পারবেন, কী ধরনের ভয়ানক পরিস্থিতি তাঁরা তৈরি করছেন। চোখের সামনে যা ঘটছে, তা দেখলে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান দল আর তার কট্টর সমর্থক ‘ফক্স নিউজ’ হয়তো বাস্তবটা নিয়ে কিছুক্ষণ হলেও ভাববে।
করোনা সংকটেও আমরা এর লক্ষণ দেখেছি। সতর্কতা নিয়ে যেসব রিপাবলিকান গভর্নর হাস্যরস করেছিলেন, তাঁরা পরে বিষয়টি আমলে নিয়েছেন। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া এবং টিকাবিরোধী অবস্থানের কারণে তাঁদের রাজ্যের বাসিন্দারা ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়েছে।
নীতিনির্ধারকদের পরিবেশগত বিপর্যয়কে গুরুত্ব না দেওয়ার একটা প্রভাব সাধারণ মানুষের মানসিকতায়ও ছাপ ফেলে। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ৫৮ শতাংশ রিপাবলিকানের কাছে জলবায়ু পরিবর্তন উদ্বেগের কোনো বিষয়ই নয়। ৪০ শতাংশের বেশির মতে, এখানে মানুষের কোনো ভূমিকাই নেই। আর ৪৪ শতাংশের ধারণা, পরিবেশবিজ্ঞানীরা এ–সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণী আলোচনায় অতিরিক্ত প্রভাব রাখছেন।
কখনো এই সংকটকালের ইতিহাস লেখা হলে সম্ভবত তা লিখবে ভিনগ্রহের বাসিন্দারা, তত দিনে মানুষ এই পৃথিবীকে ধ্বংস করে ফেলবে। আর যদি এই অপরাধের পেছনের ব্যক্তিদের স্মরণে একটি জাদুঘর তৈরি করা হয়, সেখানে রিপাবলিকান পার্টি আর ফক্সের কর্তাব্যক্তিদের সম্মানে বিশেষ ঘর থাকবে।
গণমাধ্যমের দায়িত্ব অনেক। গণমাধ্যম পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান এফএআইআরের একটি প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তন ও জেফ বেজোসের মহাকাশ ভ্রমণের খবর কোনটা মর্নিং টিভি কতক্ষণ সম্প্রচার করেছে, তার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই টেলিভিশন স্টেশন তাদের সকালের অনুষ্ঠানগুলোতে ২০২০ সালে পুরো বছর ধরে জলবায়ু সংকটের খবর প্রচার করেছে ২৬৭ মিনিট। আর মাত্র এক দিনেই বেজোসের ওই গুরুত্বহীন জনসংযোগের বার্তা সম্প্রচার হয়েছে ২১২ মিনিট। অথচ কে না জানে, জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট হচ্ছে মানবসভ্যতার লড়াই এবং এটাই ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ এখন।
আপনার প্রশ্নে ফিরে আসি। মানবসভ্যতা স্পষ্টতই লড়াইটায় হেরে যাচ্ছে। কিন্তু এখনো মোটেই সব শেষ হয়ে যায়নি। আরও ভালো একটা পৃথিবী হওয়া সম্ভব, আমরা জানি, সেটা কীভাবে অর্জন করা যায়। গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে, আমাদের এখন ভয় পেতে হবে। তবে হতাশ হলে চলবে না।
প্রশ্ন :
সি জে পলিক্রনিউ: জলবায়ু সংকট নিয়ে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়গুলোর একটি হচ্ছে, যখন ভার্চ্যুয়ালি প্রকাশিত জলবায়ুসংক্রান্ত সব প্রতিবেদনে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব ক্রমশ বাড়তে দেখা যাচ্ছে, সেই সময়েও এ বিষয়ে সন্দেহ এবং নিষ্ক্রিয়তা রয়েছে সর্বত্র। আপনার মতে, জলবায়ু সংকটকে গুরুত্ব না দেওয়ার পেছনে কি শুধু সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কারণ রয়েছে, নাকি অন্য কিছুও কাজ করছে? আমার ধারণা, বিজ্ঞান ও যুক্তিনির্ভরতার ওপর উত্তরাধুনিক চিন্তার আক্রমণ এবং জলবায়ু সংকটকে গুরুত্ব না দেওয়ার মধ্যে একটি সম্পর্ক রয়েছে।
নোয়াম চমস্কি: সবকিছু নিয়ে সংশয় প্রকাশের একটি ধারা ১৭ শতকে ছিল। বৃদ্ধিবৃত্তির ইতিহাসে এই সময়কালটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এই চিন্তার ধারা অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান থেকে প্রকৃতিকে বোঝার ক্ষেত্রে অগ্রগতি এনেছিল। আমার মনে হয় না, উত্তরাধুনিকতার চর্চা একে ছাপিয়ে যেতে পেরেছে। প্রশ্ন করছেন বলে বলছি, এ ক্ষেত্রে উত্তরাধুনিকতার চর্চা তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। যদি প্রভাব পড়েও থাকে, সেটা খুব স্বল্পশিক্ষিতদের ক্ষুদ্র পরিসরে। পরিবেশবিজ্ঞানকে অস্বীকার করার মধ্যে আসলে বিজ্ঞানকে বর্জনের প্রবণতাই রয়ে গেছে। আমার কাছে এসব সংকট সংস্কৃতির একেবারে গভীর থেকে আসে।
এখনো একটি বড় অংশের মানুষের মধ্যে বৈজ্ঞানিক তথ্য–প্রমাণকে অস্বীকার করার প্রবণতা রয়েছে। বিজ্ঞানীরাও মানুষ। তাঁরা বা তাঁদের প্রতিষ্ঠান সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। কেউ তাঁদের কাছ থেকে ভুল, অসততা, ছেলেমানুষের কলহ এবং সাধারণ মানুষের যাবতীয় ত্রুটি পেতে পারেন। কিন্তু যে পৃথিবীতে আমরা বাস করি, তাকে বোঝার জন্য মানুষের প্রচেষ্টাকেই যদি প্রশ্নের মুখে ফেলি, তাহলে আশা করার আর কিছু থাকে না।
প্রশ্ন :
সি জে পলিক্রনিউ: জলবায়ু সংকট নিয়ে আলোচনাগুলো হয় মূলত সমতা ও সুবিচারের প্রশ্ন সামনে রেখে। ‘জলবায়ু সমতা বনাম জলবায়ু ন্যায়বিচারের’ প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া হয়, বিশেষ করে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুসারে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার লক্ষ্য অর্জনের আলোচনায় আমাদের এসব বিষয়ে কতটা মনোযোগ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিদ্যমান সংকট মোকাবিলার একমাত্র পন্থা হিসেবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার বিষয়টিই আলোচিত হচ্ছে।
নোয়াম চমস্কি: একটা কথা এড়িয়ে গেলে চলবে না যে এরা সংখ্যায় খুব অল্প কিন্তু বিত্তবান, যাদের অধিকাংশের বসবাস ধনী দেশগুলোতে, তারাই পরিবেশ সংকটের জন্য প্রধানত দায়ী। আগেও তারা এটা করেছে, এখনো করছে। তাই কার্বন নিঃসরণ বন্ধ এবং সমতা ও ন্যায়বিচারের বিষয়গুলো একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। নৈতিক দায়বদ্ধতার বাইরেও কার্বন নিঃসরণ বন্ধের জন্য যে আর্থসামাজিক পরিবর্তন দরকার, তার জন্য বিপুল জনসমর্থন প্রয়োজন। জলবায়ু ন্যায়বিচার ছাড়া এটা অর্জন করা সম্ভব হবে না।
প্রশ্ন :
সি জে পলিক্রনিউ: আপনি ও রবার্ট পলিন মিলে ‘জলবায়ু সংকট ও বৈশ্বিক সবুজায়ন নতুন চুক্তি: ধরিত্রী রক্ষার রাজনৈতিক অর্থনীতি’ নামে একটা বই লিখেছেন। রবার্ট পলিন বলে আসছেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবিলার একমাত্র কার্যকর পথ হচ্ছে সবুজায়নের জন্য বৈশ্বিক চুক্তিতে পৌঁছানো। আমার প্রশ্ন দুটি প্রসঙ্গে: প্রথমত, গত ৪০ থেকে ৫০ বছরে বিশ্বে অনেক কিছুই ঘটেছে যা এক ধরনের বিশ্বায়ন। তবে এসব হয়েছে জাতিভিত্তিক রাষ্ট্রের ধারণা থেকে। আন্তর্জাতিকতাবাদকে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? দ্বিতীয়ত, কোন ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে যাতে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবিলায় এই আন্তর্জাতিকতাবাদ ভূমিকা রাখবে?
নোয়াম চমস্কি: আন্তর্জাতিকতাবাদের অনেক রকমফের আছে। একধরনের আন্তর্জাতিকতাবাদ হচ্ছে মুক্ত বাণিজ্যের নামে চাপিয়ে দেওয়া নির্দিষ্ট বিশ্বায়নের ধারণা। নব্য উদারতাবাদের বছরগুলোতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট চুক্তির মধ্য দিয়ে মুক্তবাণিজ্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে এ বিশ্বায়নে। এটা একধরনের শ্রেণিসংগ্রাম তৈরি করেছে। আরেক ধরনের আন্তর্জাতিকতাবাদ হচ্ছে অক্ষ শক্তির মৈত্রী, যার ফলাফল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এটা আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সময়ের পররাষ্ট্রনীতিতে কিছুটা দেখেছি। যেমন ওয়াশিংটনের পক্ষে কাজ করা প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে জোট গঠন।
আরেক ধরনের আন্তর্জাতিকতাবাদ দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিক আন্দোলনের সময়, যার নেতৃত্বে ছিল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স অব দ্য ওয়ার্ল্ড (আইডব্লিউডব্লিউ)। বিভিন্ন দেশের অন্য শ্রমিক ইউনিয়নগুলোও তাদের নামে ‘ইন্টারন্যাশনাল’ ব্যবহার করে। এর মধ্য দিয়ে সত্যিকারের আন্তর্জাতিকতাবাদের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন ঘটে।
ইউরোপে এ ধরনের আন্তর্জাতিকতাবাদের সবচেয়ে সোচ্চার ব্যক্তি ছিলেন রোজা লুক্সেমবার্গ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আন্তর্জাতিকতাবাদের বিপরীতে উন্নততর সভ্যতার ধারণার উত্থান ঘটে। সে সময় উন্নততর সভ্যতার ধারণাই জয়ী হয়।
বর্তমানে আমরা দেখছি, আন্তর্জাতিকতাবাদের আরও নানা ধরনের প্রকাশ ঘটছে। ২০২০ সালের প্রথম দিকে জার্মানি আর অস্ট্রিয়ার পরিস্থিতি বেশ ভালো, কিন্তু ইতালিতে তখন করোনা মহামারি ভয়ানকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সে সময় ধনী প্রতিবেশীরা এগিয়ে না এলেও ইতালি কিন্তু সত্যিকার আন্তর্জাতিকতাবাদের মধ্য দিয়েই উপকার পেল। কিউবা সেখানে চিকিৎসক পাঠাল। অন্যান্য দেশের প্রতিও তারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে, যার মধ্যে পানামাও রয়েছে। কিন্তু এখানে আবার যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ ঘটল। ২০২০ সালে ট্রাম্প সরকারের স্বাস্থ্য ও মানবিক সেবা দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে ঘোষণা করা হলো, কিউবার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে এই অঞ্চলকে রক্ষায় কিউবার সব চিকিৎসককে বহিষ্কারের জন্য পানামাকে চাপ দিয়ে সফল হয়েছে তারা।
এটার পরিবর্তন হতে হবে। এখন সবাই বুঝতে পারছে যে ধনী দেশগুলোর করোনার টিকার মজুত শুধু অনৈতিকই নয়, আত্মবিধ্বংসীও। দুর্বল অর্থনীতির দেশ এবং ধনী দেশগুলোর যাঁরা টিকা নিতে চান না, তাঁদের দেহে ভাইরাসের নতুন নতুন ধরন তৈরি হবে। তাতে ধনীরাসহ পৃথিবীর সবার জন্যই বড় বিপদ দেখা দেবে। এর চেয়ে বেশি গুরুতর হচ্ছে, ধরিত্রীর উষ্ণায়ন কোনো দেশের সীমানা মানে না।
l ঈষৎ সংক্ষেপিত