ফিলিপে কুতিনহো


ফিলিপে কুতিনহোর জন্ম ১২ জুন, ১৯৯২ ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে। বেড়ে ওঠা ভাস্কো দ্য গামার বয়সভিত্তিক দলে। ইন্টার মিলান, লিভারপুল মাতিয়ে প্রতিভাবান এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার এখন বার্সেলোনার। ব্রাজিল জাতীয় দলের ‘১০ নম্বর প্লে-মেকার’। ক্ষিপ্রতা, গতি ও ড্রিবলিংয়ে পারদর্শী। দুই নম্বর স্ট্রাইকার কিংবা উইং ধরেও খেলেন। গোল বানান, গোল করেন। আর্জেন্টিনা কোচ মাউরিচিও পচেত্তিনোর চোখে কুতিনহো মেসি-রোনালদিনহোদের সঙ্গে তুল্য।

লিভারপুলে ‘খুদে জাদুকর’ আখ্যা পা্ওয়া এই ফুটবলারের মধ্যে জিকোর ছায়া দেখেন ব্রাজিলের সাবেক স্ট্রাইকার ক্যারেকা। বড় দুই ভাই ক্রিস্টিয়ানো ও লিয়ান্দ্রোর সঙ্গে ফুটসাল খেলে শৈশব কেটেছে কুতিনহোর। স্থপতি পিতা হোসে কার্লোস কোরেয়া তাঁকে নিয়ে যান ভাস্কোর এক বাছাই টুরনামেন্টে। সাত বছর বয়সে ভাস্কোর বয়সভিত্তিক দলে যোগ দেওয়া কুতিনহো ১৬ বছর বয়সে ইন্টার মিলানের দেখা পান। ৪০ লাখ ইউরোয় ইতালিয়ান ক্লাবটি তাঁকে কিনলেও দলে ভেড়াতে পেরেছে দুই বছর পর। ইতালিতে ১৮ বছরের নিচে পেশাদার ফুটবলে নামার নিয়ম নেই। ভাস্কো তাঁকে ধারে আরও দুবছর রেখে দেয়।

২০১০ সালে ‘ইন্টারের ভবিষ্যত’ তকমা নিয়ে কুতিনহোর অভিষেক ঘটে ‘নেরাজ্জুরি’দের জার্সিতে। কিন্তু ইন্টারের প্রথম একাদশে সেভাবে স্থায়ী হতে না পারায় দুই বছর পর ধারে চলে যান স্প্যানিশ ক্লাবে এস্পানিওলে। পরের বছর ৮৫ লাখ পাউন্ড ট্রান্সফার ফি দিয়ে কুতিনহোকে কেনে লিভারপুল। অ্যানফিল্ডের ক্লাবটির সাবেক ফুটবল পরিচালক ড্যামিয়েন কামোল্লি পরে জানান, কুতিনহোর সঙ্গে ইন্টারের তখনকার কোচ রাফায়েল বেনিতেজের (লিভারপুলের সাবেক কোচ) ‘বিশ্বমান’-এর খেলোয়াড়ের ‘প্রশংসাপত্র’ ছিল। ‘অলরেড’দের জার্সিতে কুতিনহো মাঠে সেই প্রশংসাপত্র অনূদিত করেছেন ১৫২ ম্যাচে ৪১ গোলসংখ্যায়। লিভারপুল তাঁর ক্লাব ক্যারিয়ারে এখনো সেরা সময়।

২০১৭ সালের আগস্টে কুতিনহোকে ৭ কোটি ২০ লাখ পাউন্ডে কেনার প্রস্তাব দিয়ে বার্সেলোনা প্রত্যাখাত হয়। এরপর আরও দুইবার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল বার্সা। কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত এ বছর ১০ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ডে কুতিনহোকে কিনতে পারে কাতালান ক্লাবটি। চুক্তির নানা শর্ত মিলিয়ে ট্রান্সফার ফি ১৪ কোটি ২০ লাখ পাউন্ড। বার্সার হয়ে ২০১৭-১৮ মৌসুমে অভিষিক্ত কুতিনহো এখন বিশ্বের তৃতীয় সরোচ্চ দামি ফুটবলার। ব্রাজিলের অনূর্ধ-১৪ দলে খেলেছেন। তবে বয়সভিত্তিক দলে জায়গা পোক্ত করেন ২০০৯ সালে, লাতিন আমেরিকার অনূর্-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রাজিলের শিরোপাজয়ে দারুণ ভূমিকা রেখে। পরের বছর ইরানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে অভিষিক্ত হলেন বড়দের দলে। ২০১১ সালে ফিফা অনূর্ধ-২০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের হয়ে জেতেন শিরোপা। কিন্তু ২০১৪ বিশ্বকাপে লুই ফেলিপে স্কলারির চূড়ান্ত ব্রাজিল দলে তাঁর জায়গা হয়নি। ২০১৫ ও ২০১৬ কোপা আমেরিকা খেললেও ‘সেলেসা্ও’দের হয়ে শিরোপা এখন্ও অধরা কুতিনহোর। রাশিয়া বিশ্বকাপে তিনি ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডের চাবিকাঠি।

 

আরও