ফরমালিন

ফরমালডিহাইডের (রাসায়নিক সংকেত HCHO) ৩৭ থেকে ৪০ শতাংশ জলীয় দ্রবণই হলো ফরমালিন। ফরমালিনে ফরমালডিহাইড ছাড়াও ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মিথানল মেশানো থাকে। ফরমালিন অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বা সংক্রামক ব্যাধিনাশক হিসেবে ব্যবহূত হয়। সাধারণত ফরমালিন মানুষের লাশসহ মৃত প্রাণীর দেহের পচনরোধে ব্যবহার করা হয়। ফরমালডিহাইড ও মিথানল এই দুটিই বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।
রুশ রসায়নবিদ আলেকজান্ডার বাটলারভ ১৮৬৯ সালে ফরমালডিহাইড আবিষ্কার করেন। তবে ফরমালডিহাইডের গঠন-প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাঁর দেওয়া তথ্য ভুল প্রমাণিত হয়। একই বছর জার্মান রসায়নবিদ অগস্ট ভিলহাম ভন হফম্যান ফরমালডিহাইডের গঠন-প্রক্রিয়া সম্পর্কে যে ধারণা দেন, সেটিই সঠিক প্রমাণিত হয়।
টেক্সটাইল, প্লাস্টিক, পেপার, রং ও নির্মাণকাজেও ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। তবে উন্নয়নশীল দেশে ফরমালিন খাদ্যদ্রব্যে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) ভেজাল খাদ্যবিরোধী অভিযানে মাছ, ফল ও শাক-সবজিতে ফরমালিনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
খাদ্যে ফরমালিন ব্যবহার করায় চোখের রেটিনা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে আক্রান্ত মানুষ হয়ে যেতে পারেন অন্ধ। এ ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত ফরমালিন মেশানো খাবার খেলে কিডনি, পাকস্থলী, যকৃতসহ মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অংশ নষ্ট হতে পারে। খাদ্যে ফরমালিন থাকার কারণে গর্ভবতী মা ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। তাঁর শিশুটি হতে পারে শারীরিক প্রতিবন্ধী। তেমনি ভূমিষ্ঠ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। তা ছাড়া ফরমালিনযুক্ত খাবার খেলে মানুষ মরণব্যাধি ক্যানসারেও আক্রান্ত হতে পারে।