যে ৫ উপায়ে ফেসবুকে নিরাপদ থাকবেন
ফেসবুকে বেড়ে গেছে ধোঁকাবাজি। নানা কৌশলে সাইবার দুর্বৃত্তরা আপনার অ্যাকাউন্ট-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর তা কাজে লাগিয়ে অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে নেয়। সাইবার দুর্বৃত্তদের হাত থেকে অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখতে নিজের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি কৌশল জানা থাকতে হবে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, মানুষের তথ্য নিরাপদে রাখা তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
ধোঁকাবাজি শনাক্ত করে তা প্রতিরোধ করার পাশাপাশি তথ্যের এবং তাদের সিস্টেমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ফেসবুক টিম দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। ফেসবুকের পাশাপাশি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট সুরক্ষায় ফেসবুক ব্যবহারকারীর কিছু দায়িত্ব রয়েছে। অ্যাকাউন্ট এবং ফেসবুক পেজের নিরাপত্তা রক্ষায় সন্দেহজনক অনুরোধ এবং কার্যক্রম বুঝতে সহায়তা করে এমন ৫ নিরাপত্তাবিষয়ক পরামর্শ জেনে নিন:
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এবং টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন
অ্যাকাউন্টের সুরক্ষায় শক্তিশালী এবং অনন্য পাসওয়ার্ড পছন্দ করুন। অ্যাকাউন্ট তৈরিতে আপনার নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল অ্যাড্রেস বা সাধারণ শব্দ যোগ করা থেকে বিরত থাকুন। অন্যান্য অনলাইন সেবায় আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড একবারের বেশি ব্যবহার করা এবং অন্য কারও সঙ্গে নিজের পাসওয়ার্ড শেয়ার করা থেকে সব সময় বিরত থাকুন। আপনার অ্যাকাউন্ট আরও নিরাপদ করার জন্য নিজের এবং আপনার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অন্যদের অ্যাকাউন্টে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন।
বাড়তি নিরাপত্তা স্তরটি একবার সেট করে নিলে অন্য কোনো কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন থেকে আমাদের অপরিচিত কেউ যদি আপনার অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে চেষ্টা করে, তাহলে প্রতিবারই আমরা আপনাকে কোড বা লগ ইন নিশ্চিত করতে বলব। টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সেট আপ ও নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে ফেসবুকের হেল্প সেন্টারে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।
পেজের কার্যক্রম ও নিয়ম-নীতি পর্যালোচনা
অনেকেই ফেসবুক পেজ চালান। পেজের যেসব কার্যক্রম এবং নিয়ম-নীতি আছে, সেগুলোর সঙ্গে নিজেকে পরিচিত করুন। যাঁদের পেজের সেটিংয়ে এডমিন অ্যাকসেস আছে, তাঁদের নিয়মিত পেজের কার্যক্রম এবং নিয়ম-নীতি পর্যালোচনা করুন এবং পেজে কোনো বিজনেস ম্যানেজারকে যুক্ত করার সময় নিজের দেওয়া নিয়মগুলোর ব্যাপারে ভেবে দেখুন। পেজের একাধিক এডমিন রাখতে পারেন। পেজের অ্যাকসেস হারিয়ে ফেললে তিনি আপনাকে আবার সেখানে ফিরিয়ে নিতে পারেন।
অপরিচিতদের সঙ্গে বন্ধুত্ব নয়
মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে তাদের কাছ থেকে কার্যসিদ্ধি করার লক্ষ্যে স্ক্যামার বা সন্দেহজনক ব্যক্তি নকল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারে। এদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করলে তারা আপনার টাইমলাইনে স্প্যাম পোস্ট করে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারে। স্ক্যামার আপনাকে এবং আপনার পরিচিতজনদের বিদ্বেষপূর্ণ পোস্টে ট্যাগ করতে এবং মেসেজ পাঠাতে পারে। তাই সতর্কতার সঙ্গে আপনার পরিচিত এবং বিশ্বস্ত মানুষদের বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণ করেন। একইভাবে, আপনার পেজ ব্যবস্থাপনার জন্য এমন কোনো নিয়ম-নীতি রাখবেন না, যে বিষয়ে আপনি বিস্তারিত জানেন না। আপনার পেজের সন্দেহজনক কোনো অনুরোধ আপনি এখানে রিপোর্ট করতে পারেন।
সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক করবেন না
অপরিচিত লিংক, বিশেষ করে আপনি যাদের জানেন না বা বিশ্বাস করেন না, তাদের কাছ থেকে আসা লিংকগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক বা সন্দেহজনক ফাইল ওপেন করবেন না। সন্দেহজনক অ্যাপ ইনস্টল করা বা ব্রাউজার এক্সটেনশন করার বিষয়ে কোনো বন্ধু বা পরিচিত সংস্থার কাছ থেকে অনুরোধ এলেও সেগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। এর মধ্যে ফেসবুক, ব্যক্তিগত মেসেজ এবং ই-মেইলে পাঠানো লিংক অন্তর্ভুক্ত। মনে রাখবেন, ফেসবুক কোনো মেইলে কখনো আপনার পাসওয়ার্ড জানতে চাইবে না। ফেসবুক থেকে পাঠানো বলে দাবি করা কোনো মেইলের সত্যতা প্রমাণ করার জন্য সম্প্রতি সিকিউরিটি ও লগ ইন সেটিংয়ে পাঠানো মেইল দেখে নিতে পারেন। যদি মনে করেন আপনার ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার জন্য কোনো পোস্ট বা বার্তা পাঠানো হচ্ছে, তাহলে এখানে রিপোর্ট করুন। ডিভাইস বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচানোর জন্য সন্দেহজনক সফটওয়্যারের চিহ্নগুলো এবং তা থেকে আপনার ডিভাইসকে রক্ষা করার উপায় সম্পর্কে জানুন।
ট্রাস্টেড কন্টাক্ট সেট করুন
আপনার অ্যাকাউন্ট এবং পেজের অ্যাকসেস হারিয়ে যেতে পারে। তাই আগেভাগে আপনার বন্ধুদের ট্রাস্টেড কন্টাক্ট হিসেবে সেট করে রাখতে পারেন। আপনি যেন নিজের অ্যাকাউন্ট ফিরে পেতে পারেন, সে জন্য তারা আপনাকে ইউআরএলের মাধ্যমে একটি রিকভারি কোড পাঠাতে পারবে। আপনার যদি মনে হয় আপনার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে তবে পেজে রিপোর্ট করুন।