ক্ষুদ্রতম পূর্ণ বর্গসংখ্যাটি কত?
গণিতে কতগুলো সহজ হিসাব আছে। যেমন, যদি বলি (ক)ক = (ক)৩, তাহলে ক এর মান কত? এর সমাধান কীভাবে করব? খুব সহজ। এক নজর দখেই বলা যায়, ক = ৩। কারণ সমীকরণের বাঁ ও ডান পাশের মান যেহেতু সমান, তাই ক এর পাওয়ারও সমান হতে হবে। তাই বলা যায় ক = ৩। কিন্তু এর আরেকটি সমাধান আছে, যা সাধারণত চোখে পড়ে না। দ্বিতীয় সমাধানটি হলো ক = ১। কারণ (১)১ = (১)৩
আরেকটি সহজ হিসাব দেখুন। প্রশ্ন হলো, যদি দুইটি সংখ্যার যোগফল ৬০ হয় এবং একটি সংখ্যা অন্যটির চেয়ে ৩২ বেশি হয়, তাহলে সংখ্যা দুটি কত? এর উত্তর বের করার জন্য আমরা প্রথমে ৬০ থেক ৩২ বিয়োগ করে ২ দিয়ে ভাগ করি। এই ভাগফলই হবে ছোট সংখ্যাটির মান। [(৬০ – ৩২) / ২] = (২৮ / ২) = ১৪। সুতরাং অপর সংখ্যাটি এর ৩২ বেশি। তাই অন্য সংখ্যাটি = (১৪ + ৩২) = ৪৬। এদের যোগফল = ( ১৪ + ৪৬ ) = ৬০।
এ সপ্তাহের ধাঁধা
ক্ষুদ্রতম কোন পূর্ণ বর্গসংখ্যা ৮, ১৫ ও ২০ দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য?
সমাধান খুব সহজ। অনলাইনে মন্তব্য আকারে অথবা [email protected] ই মেইলে আপনাদের উত্তর পাঠিয়ে দিন। সঠিক উত্তর দেখুন আগামী রোববার অনলাইনে।
গত সপ্তাহের ধাঁধার উত্তর
ধাঁধাটি ছিল এরকম: আমরা জানি (৩)২ + (৪)২ = ২৫ = (৫)২ । লক্ষ্যণীয়, ৩ ও ৪ দুইটি ক্রমিক সংখ্যা। এ রকম পরবর্তী দুইটি ক্রমিক সংখ্যা বের করুন তো যাদের বর্গের যোগফল একটি পূর্ণবর্গ সংখ্যা?
উত্তর
(২০)২ + (২১)২ = (৪০০ + ৪৪১) = ৮৪১ = (২৯)২
ধাঁধাটি বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও অনেকেই সঠিক উত্তর দিয়েছেন। ধন্যবাদ।
কীভাবে উত্তর বের করলাম
এর উত্তর বের করার সহজ উপায় হলো ক্রমিক দুটি সংখ্যার বর্গের যোগফল বের করে পরীক্ষা করে দেখা যে সেটি পূর্ণবর্গ কি না। একটু ধৈর্য্য ও সময় লাগবে।
তবে একটি সূত্র রয়েছে। মনে করি ‘ক’ একটি বিজোড় সংখ্যা। তাহলে একটি সূত্র অনুযায়ী ‘ক’ এবং [(ক২ – ১) / ২] সংখ্যা দুটির বর্গের যোগফল হবে [(ক২ + ১) / ২] এর বর্গের সমান। যেমন, ক = ৩ হলে আমরা পাব, (৩)২ + (৪)২ = ২৫ = (৫)২ । ক = ৫ হলে পরের ধারাটি হবে, (৫)২ + (১২)২ = ১৬৯ = (১৩)২। কিন্তু এখানে ৫ ও ১২ ক্রমিক সংখ্যা না হলেও ১২ ও ১৩ ক্রমিক সংখ্যা। আমাদের সমস্যাটি যদি এ রকম হতো যে দুইটি সংখ্যার বর্গের যোগফল তৃতীয় একটি পূর্ণ বর্গসংখ্যা, যেখানে প্রথম ও দ্বিতীয়টি অথবা দ্বিতীয় ও তৃতীয়টি হতে হবে ক্রমিক সংখ্যা, তাহলে অনায়াসে এই সূত্রটি ব্যবহার করা যায়। সে ক্ষেত্রে ক এর মান ৩ ছাড়াও ৫, ৭, ৯ বা যে কোনো বিজোর সংখ্যা, যেমন ১৯ ধরলে আমরা পাব যথাক্রমে
(৫)২ + (১২)২ = (২৫ + ১৪৪) = (১৬৯) = (১৩)২ । (৭)২ + (২৪)২ = (৪৯ + ৫৭৬) = (৬২৫) = (২৫)২। (৯)২ + (৪০)২ = (৮১ + ১৬০০) = (১৬৮১) = (৪১)২। অথবা ক = ১৯ হলে (১৯)২ + (১৮০)২ = (৩৬১ + ৩২৪০০) = (৩২৭৬১) = (১৮১)২। এই সংখ্যা রাশির প্রতিটির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাশিগুলো ক্রমিক সংখ্যা। যেমন ৫ এর ক্ষেত্রে (১২, ১৩), ৭ এর ক্ষেত্রে (২৪, ২৫), ৯ এর ক্ষেত্রে ( ৪০, ৪১) অথবা ১৯ এর ক্ষেত্রে (১৮০, ১৮১) প্রভৃতি।
কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় সংখ্যা দুটি ক্রমিক হতে হলে রাশিমালা হবে (৩)২ + (৪)২ = (৫)২ , (২০)২ + (২১)২ = (২৯)২ , (১১৯)২ + (১২০)২ = (১৬৯)২ , (৬৯৬)২ + (৬৯৭)২ = (৯৮৫)২ , (৪০৫৯)২ + (৪০৬০)২ = (৫৭৪১)২ , (২৩৬৬০)২ + (২৩৬৬১)২ = (৩৩৪৬১)২ , (১৩৭৯০৩)২ + (১৩৭৯০৪)২ = (১৯৫০২৫)২ প্রভৃতি। এই রাশিমালার প্রতিটির ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় রাশি দুটি ক্রমিক সংখ্যা।
(কৃতজ্ঞতা স্বীকার: সমাধানের এই জটিল সূত্রগুলো কুয়োরা ডাইজেস্ট–এ প্রকাশিত (৫ নভেম্বর ২০১৮) প্রিন্সটোন ইউনিভারসিটির অ্যাঙ্গেলোস সিরিমোকোস (Angelos Tsirimokos), বিএ ম্যাথম্যাটিক্স (১৯৭৪), কুইনস ইউনিভারসিটির ডউগ ডিলন (Doug Dillon), পিএইচডি, ম্যাথম্যাটিক্স, গণিতজ্ঞ অভিনভ শর্মাসহ (Abhinav Sharma) কয়েকজন বিশেষজ্ঞের লেখা থেকে সংগৃহীত)।
আব্দুল কাইয়ুম, সম্পাদক, মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা