কর্মক্ষেত্রে ইংরেজি এখন জানতেই হয়। কিন্তু এ জন্য চাই চর্চা। ইংরেজি শিখতে বা কথা বলতে গেলে চর্চার সঙ্গী পাবেন কোথায়? এখন অ্যাপই এমন সঙ্গী হিসেবে কাজ করবে।
বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তা মনযুর উল মামুন গত বছরের মাঝামাঝি ইংরেজি ভাষা চর্চার একটি অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন। তাঁর তৈরি ‘স্পিকলার’ নামের অ্যাপটি নামানো হয়েছে ২০ লাখের বেশিবার। এই অ্যাপ গুগল প্লে–স্টোর ও অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে পাওয়া যাবে।
মনযুর জানান, রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় তাঁর কার্যালয়। তিনি নিজের উদ্যোগে অ্যাপটির কাজ শুরু করেছিলেন। এখন ৭ জন প্রোগ্রামার নিয়োগ দিয়ে স্পিকলারসহ আরও নতুন অ্যাপ তৈরিতে কাজ করছেন। তবে তাঁর মূল সফলতা ও পরিচিতি এনেছে স্পিকলার নামের বিনা মূল্যের অ্যাপটি। এতে অবশ্য এখন বিজ্ঞাপন রয়েছে। তবে বিজ্ঞাপনমুক্ত সংস্করণ ও বাড়তি সুবিধা ব্যবহারে সাবস্ক্রিপশন ব্যবসার কথা ভাবছেন তিনি।
মনযুর প্রথম আলোকে বলেন, ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতা, গতানুগতিক ভাষাশিক্ষার কোর্স শেষ করার পরেও অনেক সময় তা সুসম্পন্ন হয় না। অভাব থেকে যায় চর্চার। ভুল ধরার কোনো সঙ্গী পাওয়া যায় না। কিন্তু স্পিকলার অ্যাপে আছে এর অন্য ব্যবহারকারীকে ফোন করে চর্চা করার সুবিধা। অ্যাপ ব্যবহারকারীরা তাঁর সুবিধাজনক সময়ে অন্য একজন ইংরেজিতে কথা বলতে আগ্রহী ব্যক্তির সঙ্গে ইংরেজি কথোপকথন চর্চা করে নিজের দক্ষতা বাড়াতে পারবেন। অপরিচিত মানুষের সঙ্গে কথা বললে নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। ফোন কল সিস্টেমের মাধ্যমে স্পিকলার অন্য যোগাযোগকারীদের সঙ্গে কল করার সুযোগ করে দেয়। চাইলে ভেরিফায়েড ব্যবহারকারীর সঙ্গেও যোগাযোগের সুবিধা আছে অ্যাপটিতে।
অ্যাপটি কীভাবে কাজ করে? এটি ব্যবহার করতে কোনো ধরনের নিবন্ধন লাগে না। তবে যদি কেউ ভেরিফায়েড ব্যবহারকারীর সঙ্গে কথা বলতে চান তাহলে সহজে এসএমএস ভেরিফিকেশন করতে পারবেন। শুধু একটি বোতাম চেপে ইংরেজিতে কথা বলা চর্চা করতে পারবেন বাইরের দেশের একজন মানুষের সঙ্গে। এ ছাড়া দৈনন্দিন জীবনে ইংরেজিতে কথোপকথনের প্রয়োজনীয় টেক্সট এবং অডিও উদাহরণ অ্যাপটিতে রয়েছে, যা ইংরেজি চর্চার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। এ ছাড়া কল ব্লক করার সুযোগও রয়েছে। অ্যাপটি মাত্র ৮ মেগাবাইট।
মনযুর বলেন, ‘যাঁরা ইংরেজিতে কথা বলতে জড়তা বোধ করেন তাঁদের জন্য এটি। এটি সহযোগিতা করবে তাঁর চাকরির ক্ষেত্রে। যাঁরা বিদেশে যেতে ইচ্ছুক অথবা ফ্রিল্যান্সিং করছেন তাঁদের জন্য এটি কাজে লাগবে।’
মনযুর জানান, একটি সফটওয়্যার প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন তিনি। পরে চাকরির প্রয়োজনে বিদেশে গিয়ে ইংরেজি কথোপকথন চর্চার প্রয়োজন বুঝতে পারেন। তখনই এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির বিষয়টি মাথায় আসে। ২০১৮ সালে চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি উদ্যোক্তা হয়ে যান তিনি। নিজে তৈরি করেন স্পিকলার। কয়েক মাসের মধ্যেই ব্যাপক সাড়া পাওয়া শুরু করি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছ থেকে। বর্তমানে প্রতি মাসে এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীরা ৫০ লাখের বেশি মিনিট কথা বলে থাকেন।
খুব অল্প সময়ে অ্যাপটি জনপ্রিয় হয়ে যায় এবং গত ১২ এপ্রিল গুগল প্লে–স্টোরের হোমপেজে অ্যাপটিকে ফিচার্ড করা হয়। গুগল প্লে–স্টোরে স্পিকলারে রেটিং ৪.৪ এবং অ্যাপ–স্টোর রেটিং ৪.২।
মনযুর বলেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে ১০ কোটি ডাউনলোডের মাইলফলক পেরোনোর লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি। এ লক্ষ্যে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন। স্টার্টআপ হিসেবে স্পিকলারের পাশাপাশি অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন তৈরির কাজ শুরু করেছেন।
স্পিকলার নামানোর ঠিকানা
অ্যান্ড্রয়েড: http://bit.ly/2Y74eZe
আইওএস: https://apple.co/2Wt3U6M