বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে অসাধারণ সাফল্য, সম্ভাবনা এবং আগামীর গতিশীল বিশ্বের বৈশ্বিক ডিজিটাল হাবে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা তুলে ধরতে আজ শনিবার রাজধানীর পূর্বাচলে ‘বাংলাদেশ: দ্য ইমার্জিং আইসিটি পাওয়ার হাউস’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা–২০২৫–এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে। বেসিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বাস্তবায়নে দক্ষ জনশক্তি তৈরি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে বিপুল পরিমাণ মেধাবী যুবশক্তি রয়েছে, যাঁদের সঠিক প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনার মাধ্যমে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বৈশ্বিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারি। বেসিস এই লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা পালন করছে।’
সেমিনারের বিশেষ অতিথি আইসিটি বিভাগের নীতিমালা উপদেষ্টা (সমন্বয় এবং সংস্কার) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বৈশ্বিক নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেটা আর্কিটেকচার (বিএনডিএ) নকশা বাস্তবায়ন, সঠিক আইসিটি মাস্টারপ্ল্যানের রূপপকল্প প্রণয়ন এবং অপরিকল্পিত হাইটেক পার্কগুলোর সংস্কার করে তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামোকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। ২০৩০ সালের মধ্যে ৬০ থেকে ৮০ লাখ তথ্যপ্রযুক্তি পেশাদার তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। সঠিক ভাবমূর্তি নির্মাণ, আগে গৃহীত প্রকল্পগুলোর পর্যালোচনা এবং শক্তিশালী ডেটা গভর্ন্যান্স কাঠামো প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে ৫ শতাংশ অবদান রাখার লক্ষ্য অর্জন করতে চাই।’
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মহাপরিচালক বেবী রানী কর্মকার তরুণ উদ্ভাবকদের সৃজনশীলতা এবং প্রযুক্তিনির্ভর একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের নির্মাণে তাঁদের অবদানের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই বছরের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থীদের প্রবেশের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।’
সেমিনারের স্বাগত বক্তব্যে বেসিসের প্রশাসক মুহম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, ‘দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে বেসিস ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৮ সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে। এখন ২ হাজার ৬৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্য সংগঠনে পরিণত হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৩৭টির বেশি দেশে ৮৪ কোটি মার্কিন ডলারের আইসিটি পরিষেবা রপ্তানি করেছে।’
বেসিস সহায়ক কমিটির সদস্য রাইসুল কবির ও বেসিস সদস্য সৈয়দ মোশাররফ আলী তথ্যপ্রযুক্তিতে তাঁদের নিজ নিজ কোম্পানির সফলতার গল্প তুলে ধরেন। এ ছাড়া এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সফলতার গল্প ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থা আইটিসির প্রযুক্তি উন্নয়ন খাতের সমন্বয়ক মার্টিন ল্যাবে। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বেসিস সহায়ক কমিটির সদস্য ফিদা হক। সমাপনী বক্তব্য দেন বেসিস সহায়ক কমিটির সদস্য (অর্থ) ফৌজিয়া নিগার সুলতানা। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন জাইকার বাংলাদেশ প্রধান ইচিগুচি তোমোহিদে, বাংলাদেশে জেট্রোর প্রধান প্রতিনিধি ইউজি আন্দো, কোট্রার নির্বাহী পরিচালক সামসু কিমসহ অনেকে।