মার্ক জাকারবার্গের করা সবচেয়ে বড় ভুল কোনটি জানেন
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার ও থ্রেডস অ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ। বয়স মাত্র ৩৯ বছর হলেও বিশ্বের সেরা ধনীদের একজন তিনি। সফল মানুষ হিসেবে পরিচিত জাকারবার্গও অতীতে করা ভুলের জন্য মনে মনে অনুশোচনা করেন। সম্প্রতি অ্যাকোয়ার্ড নামের একটি পডকাস্টে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, প্রায় ২০ বছর আগের করা একটি ভুল নিয়ে এখনো অনুশোচনা করেন তিনি। তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল সেটি।
২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনের পর রাজনৈতিক কারণে ফেসবুকের মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। তখন কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামের একটি প্রতিষ্ঠান ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্যের অপব্যবহার করে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এর ফলে বেশ চাপে পড়ে ফেসবুক। মার্ক জাকারবার্গ বিশ্বাস করেন, সে সময় সব দোষ ফেসবুকের ছিল না। তবে ফেসবুকের তখন দায়বদ্ধতার বিষয়ে আরও বিচক্ষণ হওয়া উচিত ছিল। এ বিষয়ে মার্ক জাকারবার্গ বলেন, ‘পেছন ফিরে তাকালে যেসব ভুল দেখি, তার মধ্যে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল। তার জন্য অনুশোচনা করি আমি। আমরা কিছু বিষয়ে তখন অন্য লোকেদের দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছিলাম। তারা জোর দিয়েছিল যে আমরা ভুল করছিলাম বা আমরা দায়ী। আমি আসলে মনে করি না যে আমরা দায়ী ছিলাম। এমন অনেক কিছু ছিল, যেখানে আমরা ভুল করেছি, আমাদের ঠিক করার সুযোগ ছিল। আমি মনে করি, যখন কেউ বলে কোনো সমস্যা আছে, তখন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে তার দায়িত্ব গ্রহণ করা উচিত। তখন বলতে হবে, আমরা দায়িত্ব নিতে যাচ্ছি, আমরা ঠিক করতে চেষ্টা করছি।’
পডকাস্টে জাকারবার্গ ফেসবুকের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ স্বীকার করে জানান, অনেকেই রাজনৈতিক কারণে ফেসবুকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে থাকে। প্রযুক্তি খাত ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা অনেক সামাজিক সমস্যার জন্যও দায়ী করা হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছি আমরা। এ কারণে বেশি বেশি দোষারোপ করা হয় ফেসবুককে। এমন লোক রয়েছে, যাদের কারণে রাজনৈতিক সমস্যা তৈরি হয়। তখন কেউ সমস্যা চিহ্নিত করে, আবার কেউ সমাধান করতে চায়। এমন কিছু লোক আছে, যারা শুধু দোষারোপ করার জন্য অন্যকে খুঁজে থাকে। তখন সবকিছুর জন্য দোষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও প্রযুক্তি খাতকে দেওয়া হয়। আমরা আমাদের অংশের জন্য কাজ করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু তখন সব দায়িত্ব আমাদের ওপরে চলে আসে।’
রাজনৈতিক প্রশ্নে ফেসবুকের দায়িত্ব কতটুকু, তা পরিষ্কার করে উল্লেখ না করে যে ভুল করেছেন, তার জন্য জাকারবার্গ দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, ভিত্তিহীন অভিযোগের কারণে ফেসবুক আরও পিছিয়ে পড়তে পারত। সেই ক্ষতি মেরামত করতে সময় লাগত প্রায় এক দশক। এখন রাজনৈতিক ইস্যুতে ফেসবুক সঠিক ভারসাম্য খুঁজে পেয়েছে। ফেসবুক এখন আধেয় (কনটেন্ট) মডারেশন ও নীতি সংস্কারে ব্যাপকভাবে কাজ করছে। একটি ওভারসাইট বোর্ড গঠন করার মতো সাহসী কাজ করেছে ফেসবুক। বিভিন্ন প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও ফেসবুক একইভাবে ব্যবহারকারী ও সরকারের অবিশ্বাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। গোপনীয়তা বিষয়ে সন্দেহ এখনো থাকলেও বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ব্যবহারকারী ফেসবুক ব্যবহার করছেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া