টাওয়ার স্বল্পতা ও পেশাদারত্বের অভাবে মুঠোফোন সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে

সভায় টাওয়ার–স্বল্পতা নিরসনে নীতিমালা প্রণয়ন এবং কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়প্রথম আলো

নিরাপত্তা সংস্থার অনুমতি ছাড়া বাংলাদেশের সীমান্তের ৮ থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে মোবাইল ফোনের টাওয়ার স্থাপন করা যায় না। আর এই অনুমতি পেতে ১২ মাসের বেশি সময় লেগে যায়। এর ফলে সীমান্ত এলাকার পাশাপাশি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের পড়েন গ্রাহকেরা। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে মোট টাওয়ারের সংখ্যা ৪৫ হাজার ৫৭৪টি, যা চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ। আর তাই মোবাইল টাওয়ার–স্বল্পতা নিরসনে টাওয়ার সেবা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আন্তশেয়ারিং, টাওয়ার পরিচালনায় সোলার প্যানেল স্থাপনসহ বিটিআরসির কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘মোবাইল নেটওয়ার্কের মান উন্নয়নে টাওয়ার–স্বল্পতা নিরসনে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বক্তারা।

সভায় টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইডটকো বাংলাদেশের রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান মাসুদা হোসেন বলেন, ‘প্রতি মাসে এখন একজন গ্রাহক গড়ে ছয় গিগাবাইট ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার করছেন। চার বছর পর এটা ১৭ গিগাবাইটে পৌঁছাবে। দেশের ১৯ কোটির বেশি সক্রিয় সিম ব্যবহারকারীকে পূর্ণ সেবা দেওয়ার জন্য আরও টাওয়ার প্রয়োজন। টাওয়ারের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নীতিমালা প্রণয়ন এবং কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

সভায় মোবাইল সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠান রবির প্রধান করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি কর্মকর্তা সাহেদ আলম বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে টাওয়ারের সংকট রয়েছে। অনেকেই টাওয়ার শেয়ার করতে আগ্রহী নয়। টাওয়ারের অভাবে মুঠোফোন অপারেটররা কার্যকর সেবা প্রদান করতে পারছে না।

গ্রামীণফোনের পরিচালক ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত বলেন, উন্নত টাওয়ার সেবার মাধ্যমে গ্রাহকদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও ভালো করার সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, টাওয়ার ও নেটওয়ার্ক শেয়ারিংয়ের দিকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত টাওয়ার তৈরি না করে গ্রাহক সেবায় নেটওয়ার্কের মান উন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান টাওয়ার নির্মাণে বিনিয়োগ করছে, তাদের সহযোগিতার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এ ছাড়া টাওয়ারের সঙ্গে সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল যুক্ত করার মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যেতে পারে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন টেলিটক বাংলাদেশের উপব্যবস্থাপক এস এম মাসুম, কীর্তনখোলা টাওয়ার্স লিমিটেডের উপব্যবস্থাপক এহতেশাম খান, ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাজিরীন আলম, সামিট টাওয়ার্স লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা আদনান শাহরিয়ার, প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালেদ আবু নাসের প্রমুখ।