প্রযুক্তি দুনিয়ার ‘টেলর সুইফট’ কে, চেনেন কি
একের পর এক হিট গান আর কনসার্টের জন্য সারা বিশ্বে আলোড়ন তৈরি করেছেন মার্কিন পপতারকা টেলর সুইফট। টেলর সুইফট মানেই চমক আর বক্স অফিস কাঁপানো গান। আর তাই তো যেখানেই সুইফটের কনসার্ট, সেখানেই ছুটে যান ভক্তরা। সম্প্রতি প্রযুক্তি দুনিয়াতে এমনই এক টেলর সুইফটের খোঁজ মিলেছে। তিনিও যেখানে যান, সেখানেই ভিড় জমে যাচ্ছে। সেলফি ও অটোগ্রাফের জন্য ভক্তরা ঘিরে ধরছেন তাঁকে। প্রযুক্তি দুনিয়ার এই টেলর সুইফট হলেন জেনসেন হুয়াং। ৬১ বছর বয়সী প্রকৌশলী জেনসেন হুয়াং প্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
জেনসেন হুয়াংকে প্রযুক্তির টেলর সুইফট হিসেবে প্রথম অভিহিত করেন মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ। কারণও আছে, জেনসেন হুয়াংয়ের নেতৃত্বেই সম্প্রতি অ্যাপলকে হটিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দামি প্রতিষ্ঠানের খেতাব পেয়েছে এনভিডিয়া।
এক দশক ধরে ক্রিপ্টো ও ব্লকচেন প্রযুক্তির বিস্তৃতি আর হাল আমলের এআই উন্মাদনায় এনভিডিয়া প্রসেসর বিক্রি করে সবাইকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। তাইওয়ানের প্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টিএসএমসি এনভিডিয়ার অত্যাধুনিক এআই প্রসেসর উৎপাদনের অংশীদার ২০১৯ সালে এনভিডিয়ার বাজারমূল্য ছিল প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার। চার বছরের ব্যবধানে সেই বাজারমূল্য ৩০ গুণ বেড়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্মাদনায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হওয়া প্রতিষ্ঠানের নাম এনভিডিয়া। চ্যাটজিপিটির নির্মাতা ওপেনএআই, ইলন মাস্ক থেকে শুরু করে বড় বড় প্রতিষ্ঠান এখন এআই প্রসেসরের জন্য এনভিডিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
জেনসেন হুয়াং যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশলে স্নাতক ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। পড়াশোনা শেষে জেনসেন এলএসআই লজিক ও এএমডিতে ডিজাইনার হিসেবে কাজ শুরু করেন। এক বছর পর ১৯৯৩ সালে ক্রিস মালাচৌউস্কি ও কার্টিস প্রাইমকে সঙ্গে নিয়ে এনভিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। একটা দারুণ ব্যাপার হচ্ছে, এনভিডিয়ার প্রতিযোগী অপর প্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এএমডির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিসা সু সম্পর্কে জেনসেন হুয়াংয়ের আত্মীয়।
ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, জেনসেন হুয়াং বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি। তাঁর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার। জেনসেনের নেতৃত্বে এনভিডিয়া গেমিং, থ্রিডি ডিজাইন, ডেটা সেন্টার ও অটোমোবাইল খাতেও কাজ করছে।। চালকবিহীন গাড়িশিল্পের পুরোটাই বর্তমানে এনভিডিয়ার প্রসেসরের ওপর নির্ভরশীল। ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির আয় ৪০০ গুণ বেড়েছে। ১৯৯৯ সালে মাত্র ২৫০ কর্মী থাকলেও বর্তমানে ২৭ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করছেন এনভিডিয়াতে।
সূত্র: বিবিসি ও সিএনবিসি