বাসযোগ্য নতুন এক গ্রহের খোঁজ
দূর আকাশের কোন গ্রহে মানববসতি গড়ে তোলা যায়, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা দিনরাত একাকার করে দিচ্ছেন। মাঝেমধ্যেই নতুন চমক নিয়ে নতুন গ্রহের খোঁজ মেলে আর বিজ্ঞানীরা নতুন আশায় মানববসতি স্থাপনের স্বপ্ন দেখেন। এমনই এক গ্রহের খোঁজ মিলেছে আমাদের পৃথিবী থেকে ৪০ আলোকবর্ষ দূরে। আবিষ্কৃত এ গ্রহের আকার প্রায় আমাদের গ্রহের সমানই বলে জ্যোতির্বিদেরা দাবি করেছেন। গ্রহের উপরিভাগের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা। ঢাকা শহরে গত এপ্রিল-মে মাসে একই রকমের তাপমাত্রা দেখা গেছে। নতুন স্বপ্ন তো দেখতেই পারি আমরা।
অস্ট্রেলিয়া ও স্কটল্যান্ডের গবেষকেরা এ গ্রহের খোঁজ পেয়েছেন। নতুন এ গ্রহের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গ্লিস ১২বি’। পৃথিবীর মতো আকৃতির এ গ্রহ মানুষের বসবাসযোগ্য বলে মনে করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ডের জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের (অ্যাস্ট্রোফিজিকস) গবেষক শিশির ঢোলাকিয়া গ্রহটির সন্ধানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি থেকে আবিষ্কারের খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে।
শিশির ঢোলাকিয়া বলেন, ‘আমরা অঙ্ক কষে গ্রহের সন্ধান করেছি। এটি সম্ভবত পৃথিবীর সমান আকারের। আমরা ধারণা করছি, পৃথিবীর সমান গ্রহটি নাতিশীতোষ্ণ। আর সবকিছুই সম্ভবত আমাদের পৃথিবীর মতো। এ আবিষ্কার আমাদের জন্য ইউরেকা মুহূর্ত তৈরি করেছে। গ্রহপৃষ্ঠে তরল পানির জন্য যে তাপমাত্রায় প্রয়োজন, তা আছে। গ্রহটি সম্ভাব্য বাসযোগ্য বলে আমরা আশাবাদী। গ্লিস ১২বি গ্রহটি পৃথিবীর সমান বা শুক্র গ্রহের চেয়ে সামান্য ছোট।
একটি লাল বামনগ্রহ গ্লিস ১২-কে আবর্তন করে গ্লিস ১২বি গ্রহটি। গ্লিস ১২ বামনের আকার সূর্যের আকারের প্রায় এক-চতুর্থাংশ। শিশির জানান, মাত্র ৪০ আলোকবর্ষ দূরে নতুন গ্লিস ১২বি গ্রহটির অবস্থান। এর অর্থ এই নয় যে আমরা অদূর ভবিষ্যতে যেকোনো সময় গ্রহটিতে পৌঁছাতে পারি। আমরা বিশ্বের বৃহত্তম স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে গ্রহের বায়ুমণ্ডলে কী আছে, তা জানার চেষ্টা করব, যা আমাদের নিজস্ব সৌরজগতের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে নতুন করে জানতে সহায়তা করবে। পৃথিবী ও শুক্র গ্রহে কীভাবে বায়ুমণ্ডল থাকার কারণে গ্রহপৃষ্ঠে পরিবর্তন দেখা যায়, তা বিশ্লেষণ করতে পারব আমরা। পৃথিবী জীবনের জন্য আদর্শ, আবার শুক্রপৃষ্ঠে সিসা গলানোর তাপমাত্রা সব সময় থাকে। দুটি গ্রহের মধ্যে পার্থক্য জানতে নতুন গ্রহটি সম্পর্কে গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ। নাসা ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট জরিপ স্যাটেলাইট টেস ব্যবহার করে হাজার হাজার নক্ষত্রের উজ্জ্বলতা পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করে। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে আরও তথ্য জানার সুযোগ আছে।
সূত্র: গার্ডিয়ান