গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের সীমাবদ্ধতা কী কী
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রবেশের জন্য আলাদা পাসওয়ার্ড ও ইউজার নেম ব্যবহার করতে হয়। প্রতিটি অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড আলাদা হওয়ায় পাসওয়ার্ড মনে রাখা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। তাই পাসওয়ার্ড নিরাপদে সংরক্ষণ করা জরুরি। পাসওয়ার্ড ম্যানেজার অ্যাপ ব্যবহার করে সহজেই এক বা একাধিক পাসওয়ার্ড অনলাইনে রাখা যায়। ফলে কোনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপে প্রবেশের জন্য বারবার পাসওয়ার্ড লিখতে হয় না। গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের মাধ্যমে অনলাইনে যেকোনো অ্যাকাউন্ট ও পাসওয়ার্ডের তথ্য নিরাপদে সংরক্ষণ করা যায়। ফলে গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজারে থাকা অ্যাকাউন্ট ও পাসওয়ার্ড কাজে লাগিয়ে পরে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রবেশ করা সম্ভব। তবে গুগলের বহুল ব্যবহৃত এই পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের কয়েকটি বড় সীমাবদ্ধতা ব্যবহারকারীদের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১. টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সমর্থন নেই
দ্বিস্তরবিশিষ্ট বা টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (টুএফএ) পাসওয়ার্ড ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা বাড়ানোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায়। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজার টুএফএ সমর্থন করে না। যদিও গুগলের নিজস্ব অথেনটিকেটর অ্যাপ রয়েছে। তবে একই প্ল্যাটফর্মে পাসওয়ার্ড ও টুএফএ কোড ব্যবস্থাপনার সুযোগ থাকলে ব্যবহারকারীদের জন্য তা আরও সুবিধাজনক হতো। এখন ডেস্কটপ কম্পিউটারে টুএফএ সমর্থন করে এমন কোনো ওয়েবসাইটে লগইন করার সময় কোড তৈরির জন্য আলাদা অ্যাপে যেতে হয়। অথচ অন্যান্য অনেক পাসওয়ার্ড ম্যানেজার লগইনের পরপরই স্বয়ংক্রিয়ভাবে টুএফএ কোড পূরণ করে। স্মার্টফোনেও গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজার পাসওয়ার্ড পূরণ করলেও টুএফএ কোড পেতে আলাদা অ্যাপে যেতে হয়। এই জটিলতা অনেক ব্যবহারকারীকে টুএফএ ব্যবহারের প্রতি অনাগ্রহী করে তুলতে পারে।
২. পাসওয়ার্ড শেয়ারিংয়ের সীমাবদ্ধতা
অনলাইনে নিরাপত্তার জন্য পাসওয়ার্ড শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। অন্যদের সঙ্গে অনলাইন অ্যাকাউন্টের লগইনের তথ্য শেয়ার করতে হলে এটি যেন নিরাপদ উপায়ে করা যায়, তা নিশ্চিত করা জরুরি। কিন্তু গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজারে পাসওয়ার্ড শেয়ারিংয়ের সুযোগ সীমিত। এ পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করলে কেবল গুগল ওয়ান সদস্যদের সঙ্গে পাসওয়ার্ড শেয়ার করা যায়। আবার গুগল ওয়ান সদস্যদের সঙ্গে পাসওয়ার্ড শেয়ার করা গেলেও পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করলে সেটি শেয়ার করা ব্যক্তির কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হয় না। এর জন্য ম্যানুয়ালি নতুন পাসওয়ার্ড প্রবেশ করতে হয়।
৩. ব্যাংক বা পেমেন্ট তথ্য সংরক্ষণের সুবিধা নেই
অনেক পাসওয়ার্ড ম্যানেজারে লগইনের তথ্য ছাড়াও ব্যাংক হিসাব, ক্রেডিট কার্ড, এমনকি গুরুত্বপূর্ণ নোট ও ডকুমেন্ট সংরক্ষণের সুবিধাও রয়েছে। কিন্তু গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজারে এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণের সুযোগ নেই। গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজারে কেবল পাসওয়ার্ড সংরক্ষণের টুল ব্যবহার করা যায়।
৪. সাজেস্টেড পাসওয়ার্ড সম্পাদনা করার সুযোগ নেই
পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের একটি মৌলিক কাজ হলো পাসওয়ার্ড তৈরি করা। কিন্তু গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজারে সাজেস্ট করা পাসওয়ার্ডের গঠন পরিবর্তনের সুযোগ নেই। ফলে সাজেস্টেড পাসওয়ার্ডের দৈর্ঘ্য, সংখ্যা বা বিশেষ চিহ্ন যুক্ত করা বা বাদ দেওয়া যায় না।
৫. শুধু ক্রোম ব্রাউজারেই ব্যবহার করা যায়
পাসওয়ার্ড ম্যানেজারকে ব্যবহারকারীর অনলাইন নিরাপত্তার কেন্দ্রবিন্দু বলা যায়। এটি যাতে সব প্ল্যাটফর্মে সহজে ব্যবহার করা যায় তা নিশ্চিত করা জরুরি। কিন্তু গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজার কেবল ক্রোম ব্রাউজারেই কাজ করে। ফায়ারফক্স, সাফারি বা অন্য ব্রাউজার থেকে গুগলের পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করা যায় না।
সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ