যুক্তরাষ্ট্রে মেটার ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে, বদলে কী চালু হচ্ছে
যুক্তরাষ্ট্রে মেটার পরিচালিত ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম আজ সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির নবনিযুক্ত গ্লোবাল পলিসি প্রধান জোয়েল ক্যাপলান। গত শুক্রবার এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘আজ বিকেলের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। আর নতুন কোনো ফ্যাক্ট-চেক হবে না, থাকবেন না কোনো ফ্যাক্ট-চেকারও।’
ফ্যাক্ট-চেকিংয়ের বদলে মেটা চালু করছে ‘কমিউনিটি নোটস’ নামের একটি নতুন ব্যবস্থা। এটি ধাপে ধাপে চালু হবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও থ্রেডস প্ল্যাটফর্মে। এ ব্যবস্থায় ব্যবহারকারী ব্যক্তিরা তথ্য সংশোধনের জন্য মন্তব্য যোগ করতে পারবেন, তবে এসব নোটসের ভিত্তিতে কোনো পোস্টের ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ ঘোষণা দেন, ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম বন্ধ করে ‘কমিউনিটি নোটস’ চালু করা হবে। জাকারবার্গ বলেন, ‘ফ্যাক্ট-চেকিং প্রক্রিয়াটি রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগে আস্থাহীন হয়ে পড়েছে। বরং এটি আস্থা তৈরি করার বদলে সেটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থেই এ পরিবর্তন এনেছি।’ তবে ডিজিটাল নীতি বিশেষজ্ঞ ও অধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, এ সিদ্ধান্তের ফলে মেটার মাধ্যমগুলোতে ভুয়া তথ্য, বিভ্রান্তিকর প্রচার এবং ঘৃণামূলক বক্তব্য আরও অবাধে ছড়াবে।
মেটার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কমিউনিটি নোটসে অংশ নিতে হলে ব্যবহারকারীর বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে, অ্যাকাউন্ট হতে হবে অন্তত ছয় মাসের পুরোনো এবং তা ‘ভালো অবস্থানে’ থাকতে হবে। তবে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—কমিউনিটি নোটস প্রযোজ্য হবে না অর্থপ্রদত্ত বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে। অর্থাৎ কেউ চাইলে অর্থ খরচ করে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিভ্রান্তিকর বা উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়াতে পারবেন, যেটি নিয়ে ইতিমধ্যে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।
ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম বন্ধ করার পাশাপাশি মেটা সাম্প্রতিক সময়ে বন্ধ করে দিয়েছে তাদের বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি (ডাইভারসিটি, ইকুইটি অ্যান্ড ইনক্লুশন) কর্মসূচি। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি শিথিল করেছে ঘৃণামূলক বক্তব্য নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত আগের কিছু নীতিমালা।
সূত্র: ম্যাশেবল