কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে ঝুঁকিতে যেসব পেশা
বর্তমানে প্রায় সব ক্ষেত্রেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। আর তাই চাকরি থেকে শুরু করে আর্থসামাজিক সব ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ও অ্যাকসেঞ্চর ‘জব অব টুমোরো’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব তুলে ধরেছে। অ্যাকসেঞ্চরের কর্মকর্তা (যোগাযোগ, গণমাধ্যম ও প্রযুক্তি) ক্যাথেলিন ও’রাইলি বলেন, ‘জেনারেটিভ এআইয়ের কারণে আমরা যেভাবে কাজ করছি, তার ওপর প্রভাব তৈরি হচ্ছে। এআইনির্ভর প্রযুক্তি লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল মেশিন লার্নিং ও ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে আমাদের ওপর প্রভাব রাখছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি আধেয় বা কনটেন্ট তৈরিসহ তথ্য অনুসন্ধান, মানুষের মতো ভাষার অনুবাদসহ জটিল কাজ করতে পারছে। এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের কাজের ধরনকে বদলে দেবে।’ প্রতিবেদনে ৮৬৭ পেশার ১৯ হাজার ব্যক্তির মতামত ও কাজের ধরন বিশ্লেষণ করা হয়।
প্রভাব পড়ছে যেসব পেশায়
প্রতিবেদন অনুসারে, প্রযুক্তি খাতে ৭৩ শতাংশ কাজ এআইয়ের কারণে বড়মাত্রায় পরিবর্তিত হচ্ছে। যেখানে ২৬ শতাংশ কাজে এআই এখনো কোনো প্রভাব তৈরি করেনি। ফিন্যান্স বা আর্থিক খাতের ৭০ শতাংশ কাজ এআই স্বয়ংক্রিয়ভাবে করার সুযোগ তৈরি করেছে। আর মাত্র ২১ ভাগ কাজে এখনো কোনো প্রভাব রাখা শুরু করেনি। খুচরা বিক্রি ও পরিচালনাসংক্রান্ত কাজ যথাক্রমে ৬৭ ও ৬৫ শতাংশ স্বয়ংক্রিয় হয়েছে। মানবসম্পদ ও বিপণনসংক্রান্ত ৫৭ ও ৫৬ শতাংশ কাজ স্বয়ংক্রিয় হয়েছে এআইয়ের কারণে। আইন পেশা ও পণ্য সরবরাহের কাজে ৪৬ ও ৪৩ শতাংশ কাজ এআইয়ের কারণে বদলে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিয়া জাহিদি বলেন, ‘জেনারেটিভ এআইশিল্প খাত ও ব্যবসার দুনিয়া বদলে দিচ্ছে। নতুন মডেল ও পণ্য সেবার মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনার ডাক দিচ্ছে। এআই সৃজনশীলতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য নতুন টুলস বলা যায়।’
যেসব পেশাজীবীদের কাজ করছে এআই
প্রতিবেদন অনুসারে ঋণ নিরীক্ষক (ক্রেডিট অডিটর) ও ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনার (ম্যানেজমেন্ট অ্যানালাইসিস) মতো পেশাজীবীদের কাজ সবচেয়ে বেশি এআই পরিবর্তন করছে। এই দুই পেশার প্রায় ৮১ ও ৭০ শতাংশ কাজ এআই করতে পারে।
নতুন পেশার সম্ভাবনা
এআইয়ের কারণে নতুন কিছু পেশার সম্ভাবনার কথা বলছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। এআই মডেল ও প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ার্স, ইন্টারফেস ও ইন্টারেকশন ডিজাইনার, ডেটা কিউরেটর ও ট্রেনার, এথিকস ও গভর্ন্যান্স স্পেশালিস্টের মতো নতুন পেশা এরই মধ্যে চালু হয়েছে।
সূত্র: ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম