কপিরাইট লঙ্ঘন, দুই এআই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা

কপিরাইট লঙ্ঘনের মামলা করেছে ইউএমজিরয়টার্স

সুনো ও ইউডিও নামের দুটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক উদ্ভাবনী উদ্যোগের (স্টার্টআপ) বিরুদ্ধে কপিরাইট লঙ্ঘনের মামলা ঠুকে দিয়েছে সংগীতজগতের সবচেয়ে বেশি রেকর্ড লেবেল রয়েছে, এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এই স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান দুটি তাদের এআই সফটওয়্যারকে প্রশিক্ষিত করতে ‘অকল্পনীয় মাত্রায়’ কপিরাইট লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সুনো ও ইউডিওর এআই টুলে লিখিত নির্দেশনা (প্রম্পট) দিয়ে গান তৈরি করা যায়।

সুনো ও ইউডিওর বিরুদ্ধে মামলা করেছে সনি মিউজিক, ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপ (ইউএমজি), আটলান্টিক রেকর্ডস, ওয়ার্নার ব্রোস, ক্যাপিটাল রেকর্ডস এবং আরও কিছু প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ও ম্যাসাচুসেটসের ফেডারেল আদালতে ভিন্ন দুটি মামলা করে রেকর্ডিং লেবেল থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো। রেকর্ডিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা (আরআইএএ) এ মামলার ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া সংগঠনটি কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতিটি গানের জন্য দেড় লাখ মার্কিন ডলার দাবি করেছে। মামলায় সংগীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কপিরাইট করা গান এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দিতে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে। এর আগে ২০২৩ সালে আমাজনের মালিকানাধীন অ্যানথ্রোপিকের বিরুদ্ধে কপিরাইট লঙ্ঘন করে এআই চ্যাটবটকে প্রশিক্ষণের জন্য গান ব্যবহারের অভিযোগ এনে মামলা করে ইউনিভার্সাল।

মামলায় বলা হয়েছে, সুনো ও ইউডিও অবৈধভাবে অনলাইনের বিভিন্ন উৎস থেকে কপিরাইট করা সাউন্ড রেকর্ডিং সংগ্রহ করে। এরপর গান তৈরির জন্য সুনো ও ইউডিওর এআই মডেলকে প্রশিক্ষিত করতে এসব রেকর্ডিংয়ের ডেটাবেস ব্যবহার করা হয়। কপিরাইট করা এসব রেকর্ডিং ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোনো অনুমতিও নেয়নি সুনো ও ইউডিও। এআই টুল দুটি যে কপিরাইট করা সংগীত ব্যবহার করে গান তৈরি করে, তার জন্য একটি পরীক্ষা চালিয়ে প্রমাণও মিলেছে। প্রম্পটে সুপরিচিত গানের নাম উল্লেখ করা হয়। এরপর টুল দুটি যে মিউজিক ফাইল তৈরি করেছে, তাতে কপিরাইট করা সংগীতের মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। এ থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, টুল দুটিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় এসব কপিরাইট করা সংগীত ব্যবহার করা হয়েছে বলে মামলায় দাবি করা হয়েছে।

সুনোর এক বিনিয়োগকারীও বিষয়টি স্বীকার করে জানিয়েছেন, কপিরাইট সংগীত ব্যবহার করলে পরবর্তীকালে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে জেনেও এআই টুলকে প্রশিক্ষিত করতে এসব সংগীত ব্যবহার করা হয়। এ মামলার বিষয়ে ইউডিও বলছে, বিদ্যমান থাকা কোনো আধেয়কে (কনটেন্ট) নকল করার ইচ্ছা তাদের নেই। নিজস্ব প্রযুক্তির ওপর তাদের পূর্ণ আত্মবিশ্বাস রয়েছে। এমনকি এআই টুল ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত দিয়েছে ইউডিও। এ ছাড়া তাদের ফিল্টারিং ব্যবস্থা উন্নত করতে কাজ করা হচ্ছে, যাতে কোনো নকল আধেয় এই টুলের মাধ্যমে তৈরি না হয়। এদিকে সুনোর সিইও মাইকি সুলমান বলেন, ‘আমাদের প্রযুক্তি ট্রান্সফরমেটিভ। এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে টুলটির আউটপুট একেবারেই নতুন হবে।’

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস