৬০ বছর আগে তৈরি প্রথম চ্যাটবটের পুনরুত্থান
এখন তো চ্যাটজিপিটিসহ বিভিন্ন চ্যাটবট বেশ জনপ্রিয়। প্রায় ষাট বছর আগে চ্যাটবট ছিল—এ কথা বললে কেউ মনে হয় বিশ্বাস করবে না। কিন্তু বিশ্বের প্রথম চ্যাটবট এখন থেকে ৬০ বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল বলে কম্পিউটার ইতিহাস বলছে। এলিজা নামের একটি চ্যাটবট ১৯৬০–এর দশকে তৈরি করা হয়। এলিজাকে বিশ্বের প্রথম চ্যাটবট হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সম্প্রতি আর্কাইভাল রেকর্ডে পাওয়া কম্পিউটার কোড ব্যবহার করে পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে চ্যাটবটটিকে। অনেক দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছিল না এলিজার কোড।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) অধ্যাপক জোসেফ ওয়েজেনবাউম এলিজাকে তৈরি করেন। এলিজা একটি কথোপকথনমূলক প্রোগ্রাম হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। একজন মনোবিজ্ঞানী বা সাইকোথেরাপিস্টের আলাপের মতো মিথস্ক্রিয়া অনুকরণ করতে সক্ষম এলিজা। এলিজাকে প্রাথমিক পর্যায়ের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চমক বলা যায়। আজকের এআই–নির্ভর চ্যাটবটের তুলনায় এলিজা অনেক দুর্বল হলেও তার সঙ্গে কথোপকথন বেশ দারুণ বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
এলিজা চ্যাটবটের হারানো কোড ২০২১ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জেফ শ্রেগার ও এমআইটি আর্কাইভ বিশেষজ্ঞ মাইলস ক্রাউলি খুঁজে বের করেন। এলিজাকে এমএডি-এসএলআইপি নামে একটি পুরোনো অপ্রচলিত প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা হয়েছিল। ৪২০ লাইনের লেখা কোডটি ছয় দশক ধরে কার্যকর ছিল না। গবেষণার সময় এলিজাকে পুনরুজ্জীবিত করতে কয়েক বছরে লেগে গেছে বিজ্ঞানীদের। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এলিজা আবারও প্রাণ ফিরে পায়।
যদিও আর্কাইভ থেকে বের করার সময় কোডের মধ্যে একটি বাগ খুঁজে পান বিজ্ঞানীরা। ঐতিহাসিক অখণ্ডতা রক্ষার প্রয়োজন থাকলেও গবেষকেরা বাগ ঠিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিজ্ঞানী ডেভিড বেরি বলেন, আধুনিক ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল সক্ষমতায় এলিজাকে ছাড়িয়ে গেছে। এলিজার কথোপকথনমূলক স্টাইল বেশ আলাদা। এলিজা চ্যাটবটটি ব্যবহারকারীর কথা শোনার জন্য ও প্রম্পট করার জন্য প্রোগ্রাম করা হয়েছিল। এলিজাকে বিজ্ঞানীরা এআই–দুনিয়ার প্রথম দিনকার উদ্ভাবন হিসেবে গুরুত্ব দেওয়ার মাধ্যমে সেই সময়কার প্রযুক্তি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন।
সূত্র: গ্যাজেট ৩৬০