লাখো মানুষের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেবে 'বায়োনিক চোখ'
বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষকে আশার আলো দেখাচ্ছে হংকং ও যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেদের তৈরি 'বায়োনিক চোখ' যা দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পারে। মানুষের চোখের মতোই স্পর্শকাতর এ ভিজ্যুয়াল প্রস্থেটিক নিয়ে রোবোটিক প্রকৌশলীরা বলছেন, সাড়ে ২৮ কোটি মানুষের ডিভাইসটি কাজে লাগতে পরে। গুড নিউজ নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গবেষণা সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে 'নেচার' সাময়িকীতে। গবেষকেরা দাবি করছেন, তাঁরা ইতিমধ্যে এ রোবোটিক চোখ নিয়ে পরীক্ষা করেছেন। একে বলা হচ্ছে ইলেকট্রোকেমিক্যাল আই বা ইসি যা মানুষের রেটিনা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এ বায়োনিক চোখ আগামী ৫ বছরের মধ্যে ব্যবহার উপযোগী হবে।
গবেষকেরা বলেন, বায়োনিক চোখ মূলত মানুষের রেটিনার মতোই কাজ করে। এ জন্য কাঠামোগত যত নিখুঁত নকশা প্রয়োজন তা যুক্ত করেছেন গবেষকেরা। হংকং ইন্ভিার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষকেরা বলছেন, যাঁদের চোখের দৃষ্টি আংশিক বা পুরোপুরি দৃষ্টিহীন যাঁরা সবার কাজে আসবে এটি।
মানুষের চোখের মতোই কার্যক্ষম ডিভাইসটি উচ্চ রেজুলেশন ধারণ করতে পারে। এতে থাকা ক্ষুদ্র সেন্সর ছবিকে রূপান্তর করতে পারে, যা মানুষের চোখের আলোকসংবেদী কোষের অনুরূপ। এই সেন্সরগুলো অ্যালুমিনিয়াম এবং টাংস্টেন দিয়ে তৈরি একটি ঝিল্লির মধ্যে থাকে, যা মানুষের রেটিনা নকল করার উদ্দেশ্যে অর্ধ গোলকের আকারে তৈরি।
বায়োনিক আই বা বায়োনিক চোখকে মূলত ভিজ্যুয়াল প্রোস্থেসিস বলা হয়, যা পরীক্ষামূলক যন্ত্র হিসেবে দৃষ্টিহীনদের কাজে ব্যবহার করার লক্ষে তৈরি করা হয়।
এতে চোখের মনি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে সিলিকন যার মধ্যে রেটিনা বসানো থাকে। এর মধ্যেকার জায়গায় জৈব জেলকে অনুকরণ করে বসানো হয় আয়োনিক তরল যা লেন্স এবং এর পিছনে রেটিনার মধ্যে একটি বাফার গঠন করে।
হংকং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ঝিয়ং ফ্যান এবং তার সহকর্মীরা আশা করছেন, প্রযুক্তিটি ৫ বছরের মধ্যে উত্পাদন এবং প্রতিস্থাপনের জন্য ব্যবহারিক হয়ে উঠবে। এর বিশেষত্ব হবে এটি মানুষের চোখের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হবে।
অধ্যাপক ফ্যান বলেন, 'আমরা বায়ো-সামঞ্জস্যতা, স্থায়িত্ব এবং পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে আমাদের ডিভাইসটিকে আরও উন্নত করতে চাই।'