২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

মস্তিষ্কের তরঙ্গ থেকে কথা বের করা হবে

মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে মস্তিষ্কের তরঙ্গকে বাক্যে রূপান্তর করা সম্ভব হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স
মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে মস্তিষ্কের তরঙ্গকে বাক্যে রূপান্তর করা সম্ভব হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

যন্ত্রের মাধ্যমে মানুষের মস্তিষ্কের তরঙ্গ অনুবাদ করে তা সামনে হাজির করা সম্ভব। এটা বৈজ্ঞানিক কোনো কল্পকাহিনি নয়। মার্কিন গবেষকেরা মেশিন লার্নিং (এমএল) ব্যবহার করে অনেকটাই এ পথে এগিয়েছেন। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কথা বলার সময় বিজ্ঞানীরা কোনো ব্যক্তির মস্তিষ্কের তরঙ্গ দেখে তা ডিকোড করার ক্ষমতার একটি ধাপ অতিক্রম করেছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান ফ্রান্সিসকোর (ইউসিএসএফ) গবেষকেরা অ্যালগরিদমকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, যা মস্তিষ্কের ধরনকে রিয়েল টাইমে বাক্যে পরিবর্তন করে ফেলতে পারে। এ সময় বাক্য গঠনে ভুলের হার মাত্র ৩ শতাংশ। একে বলা হয় ‘ব্রেন-মেশিন ইন্টারফেস’। এর আগে স্নায়বিক কার্যকলাপ ডিকোডিং বা কোড থেকে বাক্য রূপান্তর করতে সাফল্যের হার ছিল অনেক সীমিত।

‘নেচার নিউরোসায়েন্স’ সাময়িকীতে সম্প্রতি এই গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।

এর আগে গবেষকেরা কেবল কোনো শব্দের ক্ষুদ্র অংশ বা কোনো বাক্যের সামান্য কিছু অংশ ডিকোড করতে পারত। তবে মেশিন লার্নিং বিশেষজ্ঞ ড. জোসেপ মাকিন ও তাঁর সহকর্মীরা মস্তিষ্কের তরঙ্গ দেখে পুরো বাক্য পড়ে ফেলার কাজটি নিখুঁতভাবে করার চেষ্টা চালান। চারজন স্বেচ্ছাসেবক বাক্য জোরে পড়ে শোনানোর সময় ইলেকট্রোড তাঁদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ রেকর্ড করে রাখে। এরপর তা কম্পিউটিং সিস্টেমে দেওয়া হয়। এরপর কম্পিউটার সিস্টেম সেখান থেকে তথ্য বিশ্লেষণ করে শব্দ গঠন ও পরে বাক্য গঠন করে।

গবেষকেরা এখনো তাঁদের গবেষণার সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করেছেন। এখনো তাঁদের তৈরি পদ্ধতিতে ৩০ থেকে ৫০টি বাক্য ডিকোড করা যায়।

গবেষণা নিবন্ধে গবেষকেরা লিখেছেন, তাঁদের ডিকোডারকে আরও বেশি শেখানো হবে এবং নিয়মিত ভাষা ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কী পরিমাণ ডেটা বা তথ্য লাগবে, তা জানা প্রয়োজন। তাঁদের তৈরি ডিকোডার বাক্য গঠন করতে সাধারণ বাক্য বিন্যাস ব্যবহার করছে না। তাঁদের মেশিন ইন্টারফেস একক শব্দ শনাক্ত করছে। এর কারণে প্রশিক্ষণের সময় ব্যবহার করা হয়নি—এমন বাক্যও ডিকোড করে ফেলতে পারে তাঁদের সিস্টেম।

গবেষকেরা দাবি করেন, এক স্বেচ্ছাসেবক থেকে আরেক স্বেচ্ছাসেবকের কাছে যাওয়ার আগে কম্পিউটার সিস্টেমকে যখন কোনো ব্যক্তির মস্তিষ্কের তরঙ্গ ও কথা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, তখন তার ডিকোডিং ফলাফল উন্নত হয়েছে। এর অর্থ দাঁড়ায়, কৌশলটি লোকজনের মধ্যে স্থানান্তরযোগ্য হতে পারে।