দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটি হবে 'হাইব্রিড'
দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটি (বিএস-২) হবে হাইব্রিড স্যাটেলাইট। এ স্যাটেলাইট যোগাযোগ, আবহাওয়া, সামরিক বা নিরাপত্তাসংক্রান্ত কাজে লাগানো যাবে। অংশীজনদের মতামত নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের ধরন নির্ধারণের জন্য একজন পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল) কর্তৃপক্ষ এসব কথা গণমাধ্যমকর্মীদের জানায়। রাজধানীর বাংলামোটরে বিসিএসসিএলের কার্যালয়ে এক সভার পর এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় বিসিএসসিএলের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘যারা স্যাটেলাইটের সার্ভিস নেয়, বিদেশি স্যাটেলাইটের সেবা কেনে, তাদের সবাইকে নিয়ে একটি সেমিনার করা হয়েছিল। তারা তাদের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে। যেহেতু প্রথম স্যাটেলাইটটি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট এবং এখনো অনেক ক্যাপাসিটি বাকি আছে, যা ব্যবহার করা যাবে, পরবর্তী স্যাটেলাইটটি তাই হাইব্রিড হবে।’
শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘পরামর্শক নিয়োগের জন্য দু-এক দিনের মধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। সেই পরামর্শক সব পর্যালোচনা করে আমাদের জানাবে, দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটি কোন ধরনের হবে। দ্বিতীয় স্যাটেলাইট আমাদের হবেই। আমরা ঠিক করেছি, দু-এক দিনের মধ্যে একটা পরামর্শক নিয়োগ দেব, যিনি বলবেন, দ্বিতীয় স্যাটেলাইট কোন ধরনের স্যাটেলাইট হবে। যেহেতু সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে এটা ছিল, তাই এই সরকারের আমলেই দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটি পাঠিয়ে চালু করতে হবে।’
দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটি রাশিয়া থেকে কেনা হবে কি না—সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটি কোন দেশ থেকে কেনা হবে বা কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা হবে, তা সরকার নির্ধারণ করবে। আমাদের কাজ হচ্ছে কোন কোন সেবা আমরা পাব, তা পরামর্শকের সঙ্গে কথা বলে সরকারকে জানানো। তিন থেকে চার মাসের মধ্যে পরামর্শকের কাছ থেকে পরামর্শ পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।’
বিসিএসসিএল সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশীজনদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটি আবহাওয়া, কৃষি বা নিরাপত্তা—কোন ধরনের হবে। এ মতামতের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রমালিকানাধীন দ্বিতীয় স্যাটেলাইট পাঠানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট (বিএস-১) প্রসঙ্গে শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘বাণিজ্যিক সম্প্রচারে গিয়ে প্রথম তিন মাস বিনা মূল্যে সেবা দেওয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বাজার যা অনুমান করেছিলাম, তার চেয়ে বর্তমান বাজার অনেক বেশি। তবে বিদেশের বাজারে ব্যান্ডউইথের যে দাম ছিল বা যে দাম ধরে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছিল, ওই দাম এখন আর নেই, কমে গেছে। এ কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।’
সভায় বিসিএসসিএলের একটি উপস্থাপনা দেন সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও প্রকৌশল) বখতিয়ার আহমেদ। তিনি জানান, টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি বিএস-১–এর মাধ্যমে ভি-স্যাট প্রযুক্তিতে ব্যাংকের শাখা ও এটিএম যন্ত্রে সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সঙ্গে এই সেবার চুক্তি, ডাচ্–বাংলা ব্যাংক লিমিটেড ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কর্তৃপক্ষের আলোচনা চলছে।