২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

কম্পিউটার হালনাগাদ কেন, কখন, কীভাবে

প্রথম আলোর পাঠক মোবাশ্বির নেহাল টেক–বার্তার কাছে জানতে চেয়েছেন, পারসোনাল কম্পিউটার (পিসি) কীভাবে হালনাগাদ বা আপগ্রেড করা যায়? তাঁর এ প্রশ্নের উত্তর থাকছে আজকের প্রতিবেদনে।

পিসি হালনাগাদ মানে কী?

পিসি হালনাগাদ বা আপগ্রেড হলো কম্পিউটারে থাকা কিছু যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করে নতুন যন্ত্রাংশ সংযোজন করে এর ক্ষমতা বাড়ানো। পিসি হালনাগাদ করে এর স্থায়িত্ব আরও বাড়িয়ে নেওয়া যায়। এ সময়ে কিছুদিন পরপর সফটওয়্যার হালনাগাদ হতে দেখা যায়। ফলে পুরোনো যন্ত্রাংশে (কনফিগারেশন) পিসি ভালো কাজ করলেও সফটওয়্যারের হালনাগাদ সংস্করণ ইনস্টল করার পর কাজের ক্ষমতা অনেক ক্ষেত্রে তা কমে যায়। এ ক্ষেত্রে পিসিতে সামান্য কিছু যন্ত্রাংশ যোগ বা পরিবর্তন করে আবার কাজের গতি ফিরে পাওয়া যায় অথবা আগের থেকেও ভালো কাজ করে।

আপগ্রেড কি জরুরি?

কম্পিউটারে ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশন বা প্রোগ্রাম যদি বিদ্যমান যন্ত্রাংশের (হার্ডওয়্যার) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, সে ক্ষেত্রে অ্যাপ্লিকেশন ধীরগতিতে চলবে। তখন বিদ্যমান হার্ডওয়্যার পরিবর্তন বা সংযোজন করে পিসির কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে নেওয়া যাবে। পিসি অনেক দিন ধরে ব্যবহার করলে এর কার্যক্ষমতা কিছুটা কমে যায়। পাশাপাশি পিসিতে অ্যাপ্লিকেশনের পরিমাণও বাড়তে থাকে। তখন পিসির কাজের ক্ষমতা কমে যায়, যে কারণে যেকোনো কাজ অনেক ধীরগতিতে হয়। তখন পিসি আপগ্রেড করা জরুরি হয়ে পড়ে।

পিসি দুভাবে আপগ্রেড করা যায়—হার্ডওয়্যার পরিবর্তন বা সংযোজন করে। আরেকটি হলো সফটওয়্যার আপডেট করে। অনেক সময় কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম হালনাগাদ করে অথবা নতুন ইনস্টল করে এবং অ্যাপ্লিকেশন পরিবর্তন করেও আপডেট করা যায়। সে ক্ষেত্রে পিসির কাজের ক্ষমতা বেড়ে যায়।

হালনাগাদের ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা নিন

পিসি হালনাগাদ করার প্রয়োজন আছে কি না, তা নির্ভর করে ব্যবহারকারীর ওপর। আপনি কি এখনো আপনার ৫ থেকে ১০ বছর বয়সী কম্পিউটার ব্যবহার করছেন? যদি সেটি হালনাগাদ সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশনগুলোর সঙ্গে ঠিকভাবে চলতে না পারে হয়, কম্পিউটার হ্যাং হয়ে যায়, ধীরগতির হয় অথবা আপনার চাহিদা অনুযায়ী কাজ করতে না পারে, তবে কিছু যন্ত্রাংশ সংযোজনের মাধ্যমে পিসি আপগ্রেড করা যেতে পারে।

বলে রাখা ভালো যে একটি কোর আই–৫  প্রসেসরের কম্পিউটারে কাজের গতি এবং সফটওয়্যার সমর্থন যত ভালো পাওয়া সম্ভব, পেন্টিয়াম ডুয়াল কোর প্রসেসর–চালিত কম্পিউটারে তা পাওয়া সম্ভব নয়। পাশাপাশি উচ্চগতি পেতে হলে র্যাম ও এসএসডি—এই দুটি যন্ত্রাংশের ব্যাপারে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রসেসর, মাদারবোর্ড, র্যাম, এসএসডি ও গ্রাফিকস কার্ডের মতো যন্ত্রাংশ সংযোজন করে কম্পিউটারের ক্ষমতা বাড়ানো যায়।

কোন কোন যন্ত্রাংশ আপগ্রেড করবেন?

ব্যবহারকারীর প্রয়োজনভেদে একটি কম্পিউটারের প্রায় সব উপকরণ বা যন্ত্রাংশই হালনাগাদ করা সম্ভব।

যা যা আপগ্রেড করা যায়—

প্রসেসর বা সিপিইউ (সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট)

সিপিইউ ঠান্ডা করার ফ্যান

মাদারবোর্ড বা মেইনবোর্ড

র৵াম (র৵ান্ডম অ্যাকসেস মেমোরি) 

জিপিইউ (গ্রাফিকস প্রসেসিং ইউনিট) বা গ্রাফিকস/ভিডিও কার্ড

পিএসইউ (পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট)

এইচডিডি (হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ) বা এসএসডি (সলিড স্টেট ড্রাইভ)

সাউন্ড কার্ড

অপটিক্যাল বা সিডি/ডিভিডি ড্রাইভ 

ডেস্কটপ কেসিং/কেস

ল্যাপটপ বা নোটবুক কম্পিউটারে বেশিরভাগ যন্ত্রাংশই মাদারবোর্ডের সঙ্গে স্থায়ীভাবে সংযুক্ত থাকে। এ কারণে এর সব যন্ত্রাংশ আপগ্রেড করা সম্ভব নয়।

ল্যাপটপের ক্ষেত্রে র৵াম এইচডিডি বা এসএসডি হালনাগাদ করা যেতে পারে।

কোন কম্পিউটার কোন পর্যন্ত হালনাগাদ করা যাবে

কোনো পিসি আপগ্রেড করার আগে এর বর্তমান যন্ত্রাংশ সম্পর্কে জানা জরুরি। যেমন যদি কোনো কম্পিউটারে সপ্তম প্রজন্মের প্রসেসর, মাদারবোর্ড থাকে তবে সেটিতে দ্বাদশ প্রজন্মের প্রসেসর বা মাদারবোর্ড লাগানো যাবে না। যদি আপগ্রেড করতেই হয় তবে প্রসেসর ও মাদারবোর্ড দুটিই বাদ দিতে হবে। একইভাবে পিসিটির অন্যান্য যন্ত্রাংশ সংযোজন–বিয়োজন করা যাবে।

হালনাগাদ কত দিন পর?

প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিনিয়ত তাদের পণ্য হালনাগাদ করে থাকে। হোক সেটা হার্ডওয়্যার কিংবা সফটওয়্যার। তাদের লক্ষ্যই থাকে ব্যবহারকারীদের সব নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় ঘটানোর। যদি ব্যবহারকারী প্রয়োজন মতো সর্বশেষ হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যার হালনাগাদ করে নির্বিঘ্নে তাঁর পিসিটি ব্যবহার করতে পারেন তবে অনেক দিন পিসি আপগ্রেড না করলেও সমস্যা নেই। সে ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে ব্যবহারকারী কীভাবে পিসিটি ব্যবহার করবেন অথবা তিনি আপগ্রেড করতে চান কি না, তার ওপর।