ঘণ্টার পর ঘণ্টা ইন্টারনেট ব্যবহার করলে মস্তিষ্কের নিউরোন কোষের কার্যক্রমে প্রভাব ফেলছে। ফলে ধীরে ধীরে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম যেমন খাদ্যাভ্যাস, ঘুমের ধরন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এ ধরনের পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে বলে নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে।
ইন্টারনেট আসক্তির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানার পরও অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বা অনলাইনে গেম খেলেন। দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট ব্যবহার আমাদের চিন্তা করার পদ্ধতিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে। শুধু তা-ই নয়, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের পর্দার আলো আমাদের চোখেরও ক্ষতি করে থাকে। নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ইন্টারনেট আসক্তির কারণে আমাদের মস্তিষ্কে থাকা নিউরনের কাজের ধরন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ফলে মস্তিষ্কের যে অংশ সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সেগুলোর কাজের ধরন বদলে যাচ্ছে। পিএলওএস মেন্টাল হেলথ জার্নালে এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষক ম্যাক্স চ্যাং বলেন, বয়ঃসন্ধিকাল জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। এই বয়সে মানুষের ব্যক্তিত্ব-সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়। এই সময়ে ইন্টারনেট আসক্তি তৈরি হলে মস্তিষ্ক ভিন্ন আচরণ শুরু করে। ইন্টারনেট আসক্তি মস্তিষ্কের একাধিক নিউরাল নেটওয়ার্কের কাজকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করছে।
অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে মানুষের স্নায়বিক পরিবর্তনও হতে পারে। মস্তিষ্কের রাসায়নিক পরিবর্তন কিশোর-কিশোরীদের সামাজিক আচরণ ও দৈনন্দিন অভ্যাসে প্রভাব ফেলছে। আরেক গবেষক আইরিন লি বলেন, তরুণদের ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে মানসিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া বদলে যাচ্ছে। বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা কমে যাচ্ছে। ইন্টারনেট আসক্তি প্রতিরোধে অভিভাবক ও শিক্ষকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে