আজ মালয়েশিয়ার বিপক্ষে কত গোলে জিতবে বাংলাদেশ?
জয়-পরাজয় এক পাশে সরিয়ে রেখে এটাই ছিল বড় প্রশ্ন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেশি গোলে জেতা তো দূরের কথা, ম্যাচে জিততেই পারেনি বাংলাদেশ। কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে।
র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ১৪৬ আর মালয়েশিয়া ৮৫। ড্রয়ে তো বাংলাদেশ সমর্থকদের খুশিই হওয়ার কথা। কিন্তু যদি জানা থাকে তিন আগে র্যাঙ্কিংয়ে ৬১ ধাপ এগিয়ে থাকা এই মালয়েশিয়াকেই ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। তাহলে আজকের ড্রয়ের পরে হতাশ না হয়ে আর থাকার কথা নয়।
প্রায় পুরো ম্যাচ মালয়েশিয়ার বক্সের মধ্যে বল ঘোরাঘুরি করলেও পাওয়া গেল না গোল নামক সোনার হরিণ। বাংলাদেশ দলের সামনে আজ বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মালয়েশিয়ার গোলকিপার নুরুল আজুরিন। এ ছাড়া কৃত্রিম ঘাসের মাঠে এক ম্যাচ খেলে আজ কিছুটা অভ্যস্ততার পরিচয় দিয়েছেন মালয়েশিয়ার মেয়েরা। সময় নষ্ট করে বারবার বাংলাদেশের খেলায় ছন্দপতন ঘটানোর কৌশলও বেছে নিয়েছিলেন তারা।
তবুও প্রশ্নটি উঠতেই পারে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে একই একাদশ নামিয়ে আজ কেন বেশি গোলে জিততে পারল না বাংলাদেশ ? অবশ্যই গোপন কোনো রহস্য নেই। র্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকা ও অতীত পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে আগের ম্যাচে বাংলাদেশকে কিছুটা হালকা ভাবে নিয়েছিল মালয়েশিয়া। সমান তালে আক্রমণ করতে গিয়ে রক্ষণভাগ ফাঁকা হয়ে গিয়েছে তাদের। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের শক্তি বুঝে নিয়ে আজ রক্ষণভাগ ঠিক রাখার ওপর জোড় দিয়েছে তারা।
তাদের ৪ জনের ডিফেন্ডিং লাইন খুব জমাট ছিল। সঙ্গে একজন হোল্ডিং মিডফিল্ডার সব সময় দুই সেন্টারব্যাকের সামনে বাড়তি ছায়া দিয়েছেন। দুই উইঙ্গার ভেতরের দিকে এসে রক্ষণভাগকে সহায়তা করেছে। এতে সাবিনা খাতুন, সিরাত জাহানরা ফাঁকা জায়গা তৈরি করতে পারেননি। এমন দলের গোলের তালা ভাঙার জন্য সাধারণত উপায় দুটি। প্রথমত, একক প্রচেষ্টায় রক্ষণভাগ ভাঙার মতো দ্রুত গতি সম্পন্ন স্কিল ফুল খেলোয়াড় প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, সেট পিস। সেট পিসে কিছুটা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারলেও একক প্রচেষ্টায় রক্ষণভাগ ভাঙার মতো খেলোয়াড় বাংলাদেশ দলে নেই।
তাই বলের দখলে অনেক এগিয়ে থেকেও আজ আর গোলের দেখা পাওয়া গেল না। শুরুর ৮ মিনিটের মধ্যে চারটি কর্নার পায় বাংলাদেশ। মালয়েশিয়া গোলকিপার আজ যেন পণ করেই নেমেছিলেন, আর যায় হোক আগের ম্যাচের মতো সেট পিস থেকে গোল খাব না। পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে এসে ফিস্ট করে দলকে বিপদমুক্ত করেছেন কয়েকবার। এ ছাড়া ৮ মিনিটে আঁখির বাম পায়ের বাম দিকে ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেছেন মালয়েশিয়া গোলকিপার।
ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি এসেছিল ১১ মিনিটে। মণিকার পাসে গোলমুখে শুধু ঠিক ঠিকঠাক পা লাগাতে পারলেই আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোলের মালিক হয়ে যেতেন সেন্টারব্যাক মাসুরা মাসুরা পারভিন। তাঁর টোকা ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ওখান থেকে বল বাইরে মারাটাই বুঝি বেশি কষ্টের।
১৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া সাবিনার শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেছেন নুরুল আজুরিন। গোল পাওয়া যাচ্ছে না দেখে দ্বিতীয়ার্ধে ঋতুপর্ণা চাকমা, শামসুন্নাহারকে বদলি হিসেবে নামানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরাও বাড়তি কিছু করে দেখাতে পারেননি। মালয়েশিয়ান রক্ষণভাগে বারবার ঝাঁকুনি দিলেও গোল আর পাওয়া যায়নি। শেষ মিনিট পর্যন্ত সেট পিসে গোলের সুযোগ তৈরি করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু গোল নামক সোনার হরিণ আর আসেনি।