বছর শুরুর কেনাকাটায় এত খরচ!
জানুয়ারির দলবদলে রেকর্ড ১৫৭ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৬ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা) খরচ করেছে ক্লাবগুলো। কাল এই খরচের অঙ্ক জানিয়েছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। বেশ বড় বড় কিছু দলবদলের চুক্তি হওয়া ছাড়াও খেলোয়াড়দের দলবদল সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মেয়েদের ফুটবলে দলবদলের সংখ্যা নতুন রেকর্ড গড়েছে। ৩৪১টি দলবদল হয়েছে মেয়েদের ফুটবলে, গত জানুয়ারির তুলনায় ৩০.২ শতাংশ বেশি। মোট ৭ লাখ ৭৪ হাজার ৩০০ ডলার খরচ হয়েছে জানুয়ারিতে মেয়েদের দলবদলে, এটিও নতুন রেকর্ড।
ফিফার আন্তর্জাতিক দলবদল স্ন্যাপশট অনুযায়ী, এ বছর জানুয়ারিতে ছেলেদের ফুটবলে ৪ হাজার ৩৮৭টি দলবদল সম্পন্ন হয়েছে। ২০১০ সালে ‘ট্রান্সফার ম্যাচিং সিস্টেম’ (টিএমএস) চালুর পর জানুয়ারিতে এবারের সংখ্যাটাই সর্বোচ্চ।
টিএমএস পদ্ধতি পুরোপুরি অনলাইননির্ভর। এতে দলবদলের কাজ সহজে ও পরিচ্ছন্নভাবে সম্পন্ন করা যায়। শুধু দলবদলেই ১৫৭ কোটি ডলার খরচ করেছে ক্লাবগুলো—এ অঙ্ক ২০১৮ সালের জানুয়ারির দলবদলে খরচের রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেছে। সেবারের তুলনায় এবার ২৩ কোটি ডলার বেশি খরচ করেছে ক্লাবগুলো।
ছেলেদের ফুটবলে গত বছর জানুয়ারির তুলনায় এবার দলবদলের সংখ্যা বেড়েছে ১৪.৪ শতাংশ। বেড়েছে দলবদল ফির পরিমাণও। গত বছর জানুয়ারির তুলনায় এবার দলবদল ফির পরিমাণ বেড়েছে ৪৯.৪ শতাংশ।
খরচে এবার ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো এগিয়ে। মোট ৮৯ কোটি ৮৬ লাখ ডলার খরচ করেছে ইংলিশ ক্লাবগুলো, যা এবারের দলবদলে বৈশ্বিকভাবে মোট খরচের ৫৭.৩ শতাংশ। খরচে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলোর পরই ফ্রান্সের অবস্থান। তবে পার্থক্য অনেক। ১৩ কোটি ১৯ লাখ ডলার খরচ করেছে ফরাসি ক্লাবগুলো। ইংলিশ ক্লাবগুলোর মধ্যে চেলসির ধারেকাছেও কেউ নেই। জানুয়ারির দলবদলে ৩৯ কোটি ১১ লাখ ২৮ হাজার ডলার খরচ করেছে স্টামফোর্ড ব্রিজের ক্লাবটি। বৈশ্বিকভাবে জানুয়ারির দলবদলে যত খরচ হয়েছে, তার মধ্যে ২৫ শতাংশ অর্থই চেলসির।
এর আগে বিবিসি জানিয়েছিল, জানুয়ারির দলবদলে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের ক্লাবগুলোর খরচ করা মোট অর্থের ৭৯ শতাংশ এসেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই মধ্যবর্তী দলবদলে বুন্দেসলিগা, লা লিগা, সিরি ‘আ’ ও লিগ আঁ-র ক্লাবগুলোর সম্মিলিত খরচকে চেলসি একাই ছাপিয়ে গেছে।
ইংল্যান্ডের ক্লাব ক্রিস্টাল প্যালেসের সাবেক চেয়ারম্যান ও খেলাধুলার সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট টকস্পোর্টের ফুটবল–পণ্ডিত সাইমন জর্ডান চেলসির এই খরচকে তুলনা করেছিলেন ‘মাতাল নাবিকদের টাকা খরচ করা’র সঙ্গে।
টকস্পোর্টকে জর্ডান বলেছিলেন, ‘শীর্ষ ছয় ক্লাবের মধ্যে চেলসি নেই। কিন্তু তারা মনে মনে নিজেদের সেখানে দেখে এবং খরচও করেছে সেভাবেই। মাতাল নাবিকদের মতো খরচ করেছে তারা। দুটি দলবদলের মৌসুম (গ্রীষ্মকালীন ও মধ্যবর্তী) মিলিয়ে এই দেশে (ইংল্যান্ড) যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে, তার মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশই চেলসির।’
২১ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের নয়ে চেলসি।