বায়ার্নে থেকে যেতে ভক্তের সই সংগ্রহ, তবু রাজি নন টুখেল
জাভি হার্নান্দেজ ‘ইউটার্ন’ নিয়েছেন। মৌসুম শেষে বার্সেলোনা ছাড়ার ঘোষণা দিলেও সম্প্রতি সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন জাভি। বার্সার কোচ হিসেবে থেকে যেতে চান ২০২৫ সালের জুনে চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ করে। তবে টমাস টুখেল নিজের সিদ্ধান্ত বদলাতে চান না। বায়ার্ন মিউনিখের এক সমর্থক টুখেলের থেকে যাওয়ার দাবিতে পিটিশন (সই সংগ্রহ) চালু করলেও তাতে কান দিচ্ছেন না এ জার্মান কোচ।
গত বছরের মার্চে ইউলিয়ান নাগলসমানকে ছাঁটাই করে টুখেলকে প্রধান কোচের দায়িত্ব দেয় জার্মানির সফলতম ক্লাব বায়ার্ন। তবে টুখেলের অধীনে ঘরোয়া প্রতিযোগিতাগুলোয় ভালো করতে পারেনি বাভারিয়ানরা। মৌসুমের শুরুতেই ট্রফি জেতার সুযোগ থাকলেও জার্মান সুপার কাপে লাইপজিগের কাছে ৩–০ গোলে হেরে যায় বায়ার্ন। এরপর জার্মান কাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে ছিটকে পড়ে। নিজেদের ‘সম্পত্তি’ বানিয়ে ফেলা বুন্দেসলিগা শিরোপাও কদিন আগে হাতছাড়া হয় বায়ান লেভারকুসেনের কাছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে টানা ৩ ম্যাচ হারের পরই মৌসুম শেষে টুখেলকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত জানায় বায়ার্ন। তবে তাঁর অধীনে বায়ার্ন উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ওঠায় সমর্থকেরা এখন তাঁকে থেকে যাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন। এ লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার ‘চেঞ্জ ডট অর্গ’ নামে একটি ওয়েবসাইটে পিটিশন চালু করেছে বায়ার্নের এক সমর্থক। সেখানে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ১৮১ জন স্বাক্ষর করেছেন এবং সইয়ের সংখ্যাটা বেড়েই চলেছে।
তবু বায়ার্নে আর থাকতে রাজি নন টুখেল। বাংলাদেশ সময় আজ সন্ধ্যায় ঘরের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় বুন্দেসলিগার ম্যাচে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের মুখোমুখি হবে বায়ার্ন।
ম্যাচ সামনে রেখে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ৫০ বছর বয়সী কোচ বলেছেন, ‘ওরা (ভক্তরা) চায় আমি থেকে যাই। বিষয়টি আমার জন্য ভালো হলেও আমার অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই। এটাকে গুরুত্ব সহকারে দেখছি না। আগামী ১১ দিন আমি শুধু ফুটবল নিয়েই ভাবব। এর বাইরে কিছু নয়। এটা আনন্দদায়ক হোক কিংবা অপ্রীতিকর, নিজেকে এর দ্বারা প্রভাবিত হতে দিতে পারি না।’
ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে টুখেল বলেছেন, ‘আগামীকাল (আজ) আমাদের একটা পরীক্ষা আছে। হয় আমরা বিক্ষিপ্ত হব, নয়তো সমাধান খুঁজে পাব। এখন কানে হেডফোন লাগিয়ে চলতে হবে এবং এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে। এটাই আমার কাজ।’
শোনা যাচ্ছে, টুখেলের জায়গায় বায়ার্নের কোচ হতে পারেন বর্তমানে অস্ট্রিয়া জাতীয় দলের দায়িত্বে থাকা রাল্ফ রাংনিক অথবা অ্যাস্টন ভিলার উনাই এমেরি। ‘গেগেনপ্রেসিং’ স্টাইলে খেলার ‘গডফাদার’খ্যাত রাংনিক কদিন আগে নিজেই নিশ্চিত করেছেন, তাঁর সঙ্গে বায়ার্ন কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ হয়েছে। যদিও দলটির নতুন কোচ হতে যাওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন। আর এমেরির সম্ভাবনাটা এখনো গুঞ্জনেই সীমাবব্ধ।
এ পরিস্থিতিতে বায়ার্ন সমর্থক যে পিটিশন চালু করেছে, সেটার নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমরা ইউপেলকে (টুখেলকে) চাই এবং রাংনিককে নয়!’ পিটিশনের বর্ণনায় বলা হয়েছে, ‘এমেরি ও রাংনিকের মতো কোচ পদপার্থীদের প্রতি সম্মান জানিয়েই বলছি, তাঁরা টুখেলের মতো ভালো হবেন না। ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল আমাদের ঘরেই (আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায়) হবে। সেটা বিবেচনায় নিয়ে বায়ার্ন মিউনিখের আরও খুশি হওয়া উচিত যে তারা টুখেলের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের একজন অসাধারণ কোচ পেয়েছে।’
২০২০ সালে টুখেলের অধীনেই নিজেদের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ওঠে পিএসজি। করোনাকালীন সেই ফাইনালে টুখেলের বর্তমান ক্লাব বায়ার্নের কাছেই হেরে যায় পিএসজি। তবে পরের বছর চেলসিকে তিনি ঠিকই ইউরোপীয় ক্লাব শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট এনে দেন। এবার বায়ার্ন তাঁর অধীনে শিরোপা থেকে দুই ধাপ দূরে আছে।
ভক্তের পিটিশন বায়ার্ন মিউনিখ কর্তৃপক্ষও আমলে নিচ্ছে না। ক্লাব সম্মানিত সভাপতি উলি হোয়েনেস গতকালই জার্মান পত্রিকা ফ্রাঙ্কফুর্টার আলজেমাইন জাইটুংকে জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন কোচ চূড়ান্ত করে ফেলা হবে।